‘আউল’ মানে তো নিশ্চয় জানো, পেঁচা। আর ‘হর্ন’ মানে শিং।
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, পেঁচাটির মাথায় আদৌ কোনো শিং নেই। এ নাম দেয়ার কারণ, এর মাথায় পালকগুচ্ছ শিংয়ের মত উঁচু হয়ে থাকে। একে বলা হয় ‘প্লামিকর্নস’। মাথার ওপর গুচ্ছ হয়ে থাকা পালকের মাধ্যমে এ প্রজাতির পেঁচারা তাদের নিজেদের দলের সদস্যদের চিহ্নিত করে। কী দারুণ ব্যাপার তাই না!
কেউ বলতে পারবে গ্রেট হর্নড আউল কোথায় দেখা যায়? থাক আর মাথা চুলকিয়ে লাভ নেই। উত্তর আমেরিকার বন-জঙ্গল, জলাভূমি, মরুভূমি, তুন্দ্রা এলাকা, ক্রান্তীয় বৃষ্টি এলাকা ও শহরতলীতে এদের দেখা মেলে।
কখনওবা পার্কের ভাঙা গাছের ডালে গম্ভীর মুখে বসে থাকতে দেখা যায় এদের। এসব অঞ্চলে কান পাতলে শুনতে পাবে পেঁচার হুহু ডাক। এরা এই ডাকের মাধ্যমে পরিবেশের অবস্থা সম্পর্কে ধারণা নেয়।
এছাড়াও অবস্থাভেদে এরা নানারকম শব্দ করে যেমন- শিস, চিৎকার, হিস হিস শব্দ, কম্পন ইত্যাদি। প্রতিটি ডাকের মাধ্যমে পেঁচাটি তার অবস্থান জানান দেয়। নিশাচর প্রাণী তাই বেশীরভাগ সময় রাতেই শোনা যায় পেঁচার ডাক।
পেঁচার বড় বড় চোখ আর প্রশস্ত মণি সহজেই শিকারকে খুঁজে বের করে ফেলে। তবে মানুষের চোখের মতো তারা পলক ফেলে না।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, দিক সন্ধানের জন্য এরা যেকোনো দিকেই মাথা ঘোরাতে পারে। আর দিক যে ১০টি, তা-তো জানোই। আকারে ছোট প্রশস্ত ডানা নিয়ে উড়ে বেড়ায় সমস্ত বন-জঙ্গল। ডানার নরম পালক এদের ধীরে ধীরে শিকারের কাছে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।
গ্রেট হর্নড আউলের শিকারের তালিকা বেশ বড়। ইঁদুর থেকে শুরু করে হাঁস পর্যন্ত সবই এদের মেনুতে রয়েছে।
অন্যান্য জাতের পেঁচার মতো তারাও কখনো কখনো পুরো শিকারকে আস্ত গিলে ফেলে। পরে বেঁচে যাওয়া অংশ, হাড় ও চামড়া মুখ দিয়ে বের করে দেয়।
শিকারি হিসেবে হিংস্র হলেও সন্তান লালন পালনে এরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গ্রেট হর্নড পেঁচা পরিবার তাদের বাসস্থান হিসেবে মূলত অন্য কোনো বড় পাখির পরিত্যক্ত বাসাকেই বেছে নেয়।
নিজের বাসাকে নিরাপদ রাখতে গ্রেট হর্নড পেঁচা বেশ কঠোর। অন্য কোনো পাখি বা প্রাণির বাসা দখলের চেষ্টা এরা একদম সহ্য করে না!
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৫