ঢাকা: বন্ধুরা, তোমরা কেউ ডায়েরি লেখ? ডায়েরি মানে প্রতিদিনের দিনপঞ্জি। লিখলে নিশ্চয়ই রোজকার নানা ঘটনা, আনন্দ-বেদনার অনুভূতি লিখে রাখো।
আজ যার গল্প বলবো, তার নাম আনা ফ্রাঙ্ক। জন্মদিনের উপহার পাওয়া ডায়েরি জুড়ে সে লিখেছিল তার দিনগুলোর কথা। ডায়েরির নাম সে দিয়েছিল ‘কিটি’। শুনেছো আনা ফ্রাঙ্কের নাম?
সময়টা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের। উচ্চ মধ্যবিত্ত ইহুদি পরিবারের মেয়েটি যুদ্ধের সময় আত্মগোপন করে নেদারল্যান্ডের অ্যামস্টারডামের এক ভবনে। সেখানে থাকাকালীন ডায়েরিতে লিখে ফেলে যুদ্ধের ভয়াবহতা, আত্মগোপনের দুঃসহ স্মৃতি আর মনের সব গোপন কথা।
প্রতিবার লেখার সময় আনা ডায়েরিকে কিটি বলে সম্মোধন করতো। যুদ্ধের আগের স্কুলজীবন, বন্ধু আর ঝলমলে দিনের স্মৃতির পাশাপাশি সে লিখেছিল কিশোরী মনের চঞ্চলতা ও মন হরণের অনুভূতির কথা। বন্ধু পিটারের সঙ্গে খুনসুটি আর মধুর সর্ম্পকও বাদ যায়নি।
তখন আনার বয়স মাত্র ১৫ বছর। তাকে আর তার পরিবারকে ধরে নিয়ে গেল র্জামান নাৎসি বাহিনী। ক্যাম্পে নির্যাতিত হয়ে মারা যায় প্রায় তোমাদের বয়সী এ মিষ্টি মেয়েটি।
আনা ও তার পরিবার এই বাড়িতেই আত্মগোপন করেছিল
মৃত্যুর পর তার বাবা ঘরের পুরোনো কাগজপত্রের ভেতর থেকে ডায়েরিটি খুঁজে পান। যা পরবর্তীতে ‘আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি’ নামে বই আকারে ছাপা হয়। মূলত বইটি ইংরেজি ভাষায় লেখা, পরর্বতীতে ৬৭টি ভাষায় অনূদিত হয়। এখন পর্যন্ত বইটির পাঠক সংখ্যা মিলিয়ন ছাড়িয়েছে। যেই পড়েছেন, চোখের জল সামলাতে পারেননি কেউই!
আনা ও তার পরিবার। বাম থেকে বাবা, আনা এবং পেছনে মা ও বোন মারগট
র্জামান সেনাদের ইহুদিনিধন ক্যাম্প থেকে একমাত্র আনার বাবাই জীবিত ফিরে এসেছিলেন। বই প্রকাশের পর বাবা অটো ফ্রাঙ্ক বলেন, আনা বেঁচে থাকলে খুব র্গববোধ করতো।
যুদ্ধের সময় আনা ও তার পরিবার যেখানে আত্মগোপন করেছিল, তা এখন আনা ফ্রাঙ্কের জাদুঘরে পরিণত করা হয়েছে। সেখানে আজও আনা ফ্রাঙ্ক নামের ছোট্ট মেয়েটির স্মৃতি অমলিন।
তাহলে আর কী, তার সম্পর্কে আরও ভালো করে জানতে দেরি না করে পড়ে ফেলো ‘আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি’।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৫