ঢাকা: এসে গেল ফেব্রুয়ারি। শুরু হলো ভাষার মাস।
কারণ ১৯৫২ সালের এ মাসেই বাংলাকে মাতৃভাষা করার দাবিতে ও বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন বরকত, সালাম, রফিক, জব্বার ও শফিউরের মতো আরও অনেক ভাষা সৈনিক। তাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমেই বাংলাভাষা পেয়েছিল তার যথাযথ মর্যাদা।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলন হয়েছিল, সেকথা আমাদের সবারই জানা। তবে এটাও নিশ্চয় জানো, পরবর্তীতে দিনটিকে রাষ্ট্রীয় শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আর সবচেয়ে গৌরবের আর আনন্দের কথা হলো, আমাদের ভাষা দিবসের প্রতি অর্থাৎ ভাষার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
সেই থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই ফেব্রুয়ারি মাসটি শুধুমাত্র আমাদের জন্য নয়, গোটা পৃথিবীর জন্যই হয়ে উঠেছে ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মাস।
প্রত্যেকেই নিজের ভাষাকে অনেক ভালোবাসে। আর এ ভালোবাসা প্রতি মুহূর্তের। একটি নির্দিষ্ট দিনের জন্য তা সীমাবদ্ধ নয়। কিন্তু তবুও ফেব্রুয়ারি মাসটি একটু আলাদা। যেহেতু এটা ভাষার মাস, কাজেই এ মাসে ভাষা সম্পর্কে আমাদের একটু সচেতন হওয়া উচিত। আমরা অনেকেই নিজের ভাষার পাশাপাশি ইংরেজি বা অন্য কোনো ভাষা শিখছি।
নতুন কোনো ভাষা শেখা খুব ভালো বিষয়। কিন্তু নতুন ভাষা শিখতে গিয়ে নিজের মাতৃভাষাকে অবহেলা না বা বিকৃত কোরো না। আমরা চাইলে অনেক ভাষাই শিখতে পারি। সেসব ভাষায় কথাও বলতে পারি। কিন্তু এটা তো জানো যে, মাতৃভাষার চাইতে আপন কোনো ভাষাই নেই। জন্মের পর থেকে যে ভাষায় মানুষ কথা বলে সে ভাষার প্রতি স্বাভাবিকভাবেই অন্যরকম একটি ভালোবাসা তৈরি হয়। তাই নিজের ভাষাকে অবহেলা কোরো না কেউ।
ফেব্রুয়ারি এলেই চলে আসে ভাষার কথা। ভাষা নিয়ে চলে অনেক আয়োজনও। তবে এত কিছু না করেও কিন্তু তুমি ভাষা শহীদদের প্রতি জানাতে পারো শ্রদ্ধা। যে ভাষার জন্য তারা জীবনকে উৎসর্গ করেছেন, সে ভাষাকে ভালোবাসা ও যথাযথ মর্যাদা দেওয়াই তাদের শ্রদ্ধা জানানোর সবচেয়ে ভালো উপায়।
বন্ধুরা, তাহলে ভাষার মাসে একটি প্রতিজ্ঞাই করো যে, বিশ্বের সব ভাষাকে সম্মান করবে আর নিজ ভাষা বাংলাকে ভালোবাসবে সবসময়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৫