চাঁদনী রাত, চারিদিকে থমথমে পরিবেশ ।
ঝিঁঝিঁ পোকা ডাকছে।
হালকা বাতাসে গাছের পাতা নড়ছে।
চাঁদের আলো সেটাকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।
আশেপাশে গাছ গাছালি আর কিছু ঝোপ,
পাশেই একটা ডোবা।
ডোবার পাশেই একটা বড় সড় গাব গাছ। সবার ধারনা ঐ গাব গাছে পেত্নি থাকে। দিনের বেলায় সচরাচর কেউ ওদিকে যায় না আর রাতে তো কোন কথায় নেই।
কিন্ত গোপাল ওদিকেই যাচ্ছে।
গোপালের নিজের ওপর নিজের রাগ হচ্ছে।
ঘটনাটা খুলেই বলি।
গোপালের বন্ধু প্লাবন আর রনি দুজনেই তর্কাতর্কি করছে, ভূত নিয়ে।
প্লাবন বলছে, ভূত অবশ্যই আছে আর রনি বলছে ভুত বলতে কিছু নেই।
আস্তে আস্তে তর্কাতর্কি থেকে হাতা হাতি পর্যায়ে চলে গেল ।
এমন সময় গোপালের প্রবেশ।
কিরে, মারামারি করছিস কেন ?
প্লাবন বলল, দেখনা এই বেটা বলে কিনা, ভূত বলতে কিছু নেই।
গোপাল বলল, ঠিকই তো বলেছে, এই ডিজিটালের যুগে ভূত বলতে কিছু আছে নাকি ।
এদিকে রনি, প্লাবনের উদ্দেশ্যে চোখ টিপে দিল ।
গোপাল টেরও পেল না যে, তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
রনি বলল, দেখেছিস গোপালও বলছে ভুত বলতে কিছু নেই। এবার তো স্বীকার করবি।
গোপাল বলল, এর মধ্যে স্বীকার করার কি আছে, ভূত বলতে আসলেই তো কিছু নেই।
প্লাবন বলল, প্রমান করতে পারবি?
গোপাল বলল, অবশ্যই পাববো।
প্লাবন বলল, ঠিক আছে। তাহলে বাড়ির পেছনে ডোবার পাশে যে গাব গাছ আছে সেখানে রাত বারটার সময় একা যেতে হবে।
রনি তাড়াতাড়ি বলল, গোপাল অবশ্যই যাবে. এটা কোন ব্যাপার হলো নাকি।
গোপাল এখন কি আর করবে মান সম্মানের ব্যাপার। কাজেই রাজি হয়ে গেল।
গোপল ডোবার পাশ দিয়ে হাটছে আর মনে মনে চিন্তা করছে, ভালোয় ভালোয় রাতটা কাটলেই বাঁচি।
হঠাৎ গোপাল থমকে দাঁড়াল, গাব গাছের নিচে আবছা লাল আলো দেখা যাচ্ছে। গোপালের ভেতরে কাঁপুনি শুরু হয়ে গেল ।
হঠাৎ একটা গুরু গম্ভীর কণ্ঠ বলে উঠল, এই গোপাল তুই এখানে কেন? এত রাতে আমার ডিস্টাব নষ্ট করতে এসেছিস, যা ভাগ!
গোপালের কি যেন হল, উল্টো ঘুরে দিল এক ভোঁ দৌঁড়।
দৌঁড় দিয়ে সোজা একটা ঝোঁপের মাঝে পড়ে অজ্ঞান হয়ে গেল ।
পরের দিন, গোপাল জ্ঞান ফিরে জানতে পারল রনি আর প্লাবন তার সাথে ফাজলামো করেছে।
গাছের নিচে অডিও প্লেয়ার রেখেছিল ।
রনি আর প্লাবন সেটা দূর থেকে রিমোট দিয়ে অন করে। অন করার ফলে লাল আলো জ্বলে উঠে।
সেটা দেখেই ভয় পায় গোপাল।
গোপাল মনে মনে শপথ নেয় এর প্রতিশোধ সে নেবেই।