রাতের পাখি পেঁচা। অনেকের কাছে পেঁচা ভূতুড়ে পাখি বলেও পরিচিত।
পেঁচার বিষয়ে মানুষের মনে রয়েছে নানা কৌতূহল। এই যেমন পেঁচা অন্ধকারে দেখে কী করে! দিনের আলোতেও পেঁচা দেখতে পায় কি-না। নিশ্চয়ই তোমাদের মনেও রয়েছে এই একই প্রশ্ন, তাই না!
আচ্ছা, তবে একে একে বলছি। তোমরা অনেকেই হয়তো সত্যিকারের পেঁচা দেখেছো। যারা দেখোনি, তারা নিশ্চয়ই ছবি দেখেছো। ভালো করে খেয়াল করলে দেখবে, পেঁচার চোখ দু’টো অন্যান্য প্রাণীর চোখের চেয়ে অনেক বড়। ফলে পেঁচার চোখে মানুষের চোখের তুলনায় অনেক বেশি আলো প্রবেশ করে।
আমাদের চোখের ভেতরে আলো প্রবেশের পর তা চোখের পেছনদিকে রেটিনায় পৌঁছে সামনের বস্তুর ছবি তৈরি করে। আর সেজন্যই আমরা দেখতে পাই।
পেঁচার চোখের ভেতরে যেহেতু আমাদের চোখের চেয়ে বেশি আলো প্রবেশ করে, তাই পেঁচার জন্য দেখাটা অনেক সহজ হয়ে যায়। এছাড়া পেঁচার চোখে রড সেল নামে এক ধরনের বিশেষ কোষ থাকে। আর এই কোষ পেঁচাকে রাতের অন্ধকারে দেখতে সাহায্য করে। অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় পেঁচার চোখে রড সেলের পরিমাণ অনেক বেশি। তাই এদের জন্য অন্ধকারে দেখা খুব সহজ।
পেঁচার চোখের পেছনদিকে ট্যাপেটাম লুকিডাম নামে এক ধরনের কাঠামো থাকে। চোখে আলো পড়ার পর তা রড সেলে লেগে ট্যাপেটাম লুকিডামে পড়ে এবং সবশেষে আবার রড সেলে আঘাত করে। ফলে পেঁচা একবার নয় বরং দুইবার আলো দেখতে পায়। সেজন্য রাতটাও ওদের কাছে দিনের মতোই আলোকিত হয়ে যায়।
আরেকটা কথা, আমাদের অনেকেরই ধারণা পেঁচা দিনে চোখে দেখতে পায় না। আর তাই সারাদিন ঘুমায় আর রাতে জেগে থাকে। কথাটা কিন্তু ভুল বন্ধুরা। পেঁচা দিনের আলোতেও দেখতে পায়। কিন্তু তীব্র আলোয় ওদের চোখের পিউপিল আমাদের চেয়ে কম সঙ্কুচিত হয়। তাই তীব্র আলো ওরা সহ্য করতে পারে না। সেজন্য দিনের আলোয় ওরা চোখের পাতা অর্ধেক বন্ধ রাখে। তার মানে বুঝলে তো বন্ধুরা, পেঁচা দিনের আলোতেও দেখতে পায়।
এবার থেকে কখনও যদি দিনের বেলায় পেঁচাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখো, তাহলে বুঝে নেবে সে মোটেও ঘুমিয়ে নেই। বরং চোখ অর্ধেক বন্ধ রেখেই সবকিছু দেখছে সে।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৫
এসএস