স্কুলের প্রথম দিন যে গানটি গেয়ে তুমি ক্লাস শুরু করেছিলে সেটিই আমাদের জাতীয় সঙ্গীত। দেশের প্রতি আমাদের ভালোবাসার প্রতীক।
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। কিন্তু কিভাবে এটি আমাদের জাতীয় সঙ্গীত হলো তা কী তোমরা জানো? শোনো তাহলে....
আমার সোনার বাংলা অর্থাৎ আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা ও সুরকার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। যা ১৯৭১ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। ১৯০৬ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই সঙ্গীতের কথাগুলো রচনা করেন এবং সুর দেন। তবে গানটির পান্ডুলিপি পাওয়া যায়নি। তাই এর সঠিক রচনাকাল এখনো জানা যায়নি। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তিনি এই গানটি রচনা করেন। ১৯৭২ সালে গানটির প্রথম দশ লাইন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে নির্ধারিত হয়।
আমার সোনার বাংলা গানটি রচিত হয়েছিল শিলাইদহের ডাক-পিয়ন গগন হরকরা রচিত কোথায় পাব তারে, আমার আমি মনের মানুষ যে রে গানটির সঙ্গে মিল রেখে। ১৮৮৯-১৯০১ সময়কালে পূর্ববঙ্গে বিভিন্ন অঞ্চলে জমিদারি কাজে ভ্রমণ ও বসবাসের সময় বাংলা লোকজ সুরের সাঙ্গে তার রবীন্দ্রনাথের পরিচয় ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় রচিত হয় আমার সোনার বাংলা।
১৯৭১ সালের ১ মার্চ গঠিত হয় স্বাধীন বাংলার কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদ। এরপর ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে ঘোষিত ইশতেহারে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে ঘোষণা করা হয়। একই বছরের ১৭ এপ্রিল মুজিব নগরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে এই গানটি প্রথম জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গাওয়া হয়।
শহীদ চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান ১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বিখ্যাত ‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবিতে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানের চলচ্চিত্রায়ন করেন।