ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

অন্যকে বোকা বানালে নিজেই বোকা বনতে হয়!

মূল: ব্রাজিলের লোককাহিনী/ভাষান্তর: সানজিদা সামরিন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১৫
অন্যকে বোকা বানালে নিজেই বোকা বনতে হয়!

আগে ব্যাঙের চামড়া ছিলো খুব মসৃণ। এতো সুন্দর চামড়া নিয়ে সে খুব বড়াই করতো।

ব্যাঙ সবসময় আনন্দ-ফুর্তি করতে ভালোবাসতো। যেকোনো দাওয়াতেই থাকতো তার উপস্থিতি। যতো দূরেই হোক না কেন, কোনো দাওয়াতই সে বাদ দিতো না।
 ‍
একবার আকাশে তার দাওয়াত পড়লো। নতুন দাওয়াত পেয়ে ব্যাঙ তো ভীষণ খুশি। এদিকে, ব্যাঙের খুশি দেখে তার এক বন্ধু মজা করতে লাগলো।

বললো- ব্যাঙ ভায়া, তুমি লাফিয়ে লাফিয়ে কী করে আকাশে যাবে? তুমি তো উড়তে পারো না। তাই এবার দাওয়াতে যাওয়া বুঝি তোমার হয়ে উঠবে না।

কিন্তু ব্যাঙ মনে মনে ঠিক করলো, যে করেই হোক দাওয়াতে তাকে যেতেই হবে। এই ভেবে ব্যাঙ গেলো বাজপাখির কাছে। বাজপাখি ছিলো তার প্রতিবেশী।

ব্যাঙ বাজপাখিকে বললো- আমরা কী একসঙ্গে দাওয়াতে যেতে পারি?

বাজপাখি বললো- কেন নয়!

ব্যাঙ বাজপাখিকে বললো, পরদিন যেনো বাজপাখি তার বেহালাটিও সঙ্গে নিয়ে আসে।

বাজপাখি রাজি হলো।

দাওয়াতের দিন সকালে বাজপাখি কথামতো বেহালাসহ ব্যাঙের বাড়ি এলো।

ব্যাঙ বললো- আমাকে একটু সময় দাও। আমি তৈরি হয়ে নিই।

বাজপাখি ব্যাঙের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো। সে কাঁধ থেকে বেহালা নামিয়ে মেঝেতে রেখে অন্যমনস্কভাবে পায়চারি করছিলো। এই সুযোগে ব্যাঙ ঢুকে পড়লো বেহালার ভেতরে।

বাজপাখি ব্যাঙের জন্য অপেক্ষা করতেই থাকলো। সে তো আর জানে না, ব্যাঙ বেহালার ভেতর ঢুকে পড়েছে। এক পর্যায়ে বাজপাখি ভাবলো দাওয়াতে সে একাই যাবে। বেহালা নিয়ে সে দাওয়াত খেতে আকাশপথে উড়াল দিলো।

গন্তব্যে পৌঁছে বাজপাখি যখন বেহালা নামিয়ে রাখলো, তখন ব্যাঙ ঝট করে বেরিয়ে পড়লো। সারাক্ষণ আনন্দে মেতে রইলো সে। কিন্তু বাজপাখির মেজাজ তখনও খারাপ। সে খুব তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে বাড়ির পথে রওনা দিলো। কিন্তু যাওয়ার সময় বেহালা নিতে গেলো ভুলে।

এদিকে, ব্যাঙ তো বাড়ি ফেরার জন্য তৈরি। সে অনেক আগেই বেহালার ভেতর ঢুকে বসে রয়েছে। ভেতরে বসে সে ভাবছে, এতো সময় হয়ে এলো কিন্তু বাজপাখি আসছে না কেন! 

ব্যাঙ তো পড়লো মহাবিপদে। ব্যাঙের বিপদের কথা শুনে এক চিল তার সাহায্যে এগিয়ে এলো। ব্যাঙকে সে বললো- তুমি বেহালার ভেতর ঢুকে পড়ো, আমি তোমায় উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ব্যাঙ তো মহাখুশি।

চিল বেহালা মুখে নিয়ে উড়তে শুরু করলো। কিন্তু হাওয়ার দাপটে বেহালা তার মুখ থেকে গেলো পড়ে। ব্যাঙ উল্টেপাল্টে ধপাস করে পড়লো পৃথিবীর মাটিতে। এতো ওপর থেকে পড়ে তার চামড়া ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেলো। এপিঠ-ওপিঠ ছোপ ছোপ দাগ পড়লো সুন্দর চামড়ায়। বাড়ি ফিরে ব্যাঙ দেখলো তার সুন্দর মসৃণ ত্বক আর নেই। বাজে, রুক্ষ আর কুঁচকে গেছে।

মনে মনে সে ভাবলো- অন্যকে বোকা বানালে নিজেকেই বোকা বনতে হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৫
এসএস

** হরিণ ও বাঘের বাড়ি
** ব্যাঙ ও ঘাসফড়িংয়ের বন্ধুত্ব
** বাদুড় কেন রাতে ওড়ে
** সূর্য ও চাঁদ আকাশে থাকে কেন
** যা হয়, ভালোর জন্যই হয়
** রাত এলো যেমন করে
**  বিড়াল কেন ইঁদুর মারে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।