সে অনেক আগের কথা। মেয়েরা তখন স্কুলে পড়তে যায় না।
এই বালিকাই আমাদের নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের পায়রাবন্দ গ্রামে তার জন্ম। তার বাবা ছিলেন সম্ভ্রান্ত ভূস্বামী জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের। তার মা রাহাতুন্নেসা সাবের চৌধুরানী।
বড় ভাই ইব্রাহীম সাবেরের কাছ থেকে বেগম রোকেয়া ইংরেজি শিখেছিলেন। বোন করিমুন্নেসার কাছে শিখেছিলেন বাংলা।
১৮৯৬ সালে ১৬ বছর বয়সে রোকেয়ার বিয়ে হয়। তার স্বামী ছিলেন বিহারের অন্তর্গত ভাগলপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন। বিয়ের পর স্বামীর নামানুসারে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নামে পরিচিত হন।
সাখাওয়াত হোসেন বেগম রোকেয়াকে সাহিত্যচর্চায় উৎসাহিত করেন। ‘পিপাসা’ নামে একটি বাংলা গল্প লিখে ১৯০২ সালে সাহিত্যজগতে পা রাখেন তিনি।
১৯০৯ সালে সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের মৃত্যুর পর বেগম রোকেয়া ‘সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল’ নামে ভাগলপুরে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে স্কুলটি স্থানান্তারিত করে কলকাতায় নেওয়া হয়।
প্রথমে মাত্র ৮ জন ছাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে স্কুলটি। কিন্তু বেগম রোকেয়ার আপ্রাণ চেষ্টায় বাঙালি মুসলিম পরিবারগুলো নারী শিক্ষা সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে। চার বছরের মধ্যে তার স্কুলের ছাত্রীসংখ্যা বেড়ে ৮৪ হয়।
১৯১৬ সালে বেগম রোকেয়া প্রতিষ্ঠা করেন নারী সংগঠন আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম।
বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদান অনস্বীকার্য। তার লেখায় বাঙালি মুসলিম নারীর মুক্তির বার্তা প্রতিফলিত হয়েছে। সুলতানার স্বপ্ন, অবরোধবাসিনী, মতিচুর, পদ্মরাগ তার লেখা গ্রন্থ।
বাঙালি মুসলিম সমাজে নারীদের স্বাধীনতার পথপ্রদর্শক বেগম রোকেয়া ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বরের মৃত্যুবরণ করেন।
আজ বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী। তার প্রতি রইলো আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৫
এএ
** অকুতোভয় সংশপ্তক
** চেতনার বিজয় ‘৭১’