‘মনে করো যেন বিদেশ ঘুরে,
মাকে নিয়ে যাচ্ছি অনেক দূরে,
তুমি যাচ্ছ পালকিতে মা চড়ে
দরজা দুটো একটুকু ফাঁক করে,
আমি যাচ্ছি রাঙা ঘোড়ার ’পরে
টগবগিয়ে তোমার পাশে পাশে। ’
বলতে পারো, এটা কোন কবিতা?
এটা ‘বীরপুরুষ’ কবিতার প্রথম কয়েকটা লাইন।
আজ মা দিবস। আর এই চমৎকার কবিতাটিই হতে পারে মায়ের জন্য মা দিবসের উপহার। মাকে নিয়ে এই অসাধারণ কবিতাটি অনেক অনেক বছর আগে লিখে গেছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
এমন অনেক কবিতা লিখেছেন তিনি, যেগুলো পড়লেই মন আনন্দে ভরে যায়, কিংবা সাহসে বুক ফুলে ওঠে। তার সাহিত্য আমাদের হাসায়, কাঁদায়, সাহসী করে তোলে। পাঠকের মনে এই স্থান তৈরি করে নিতে পারার জন্যই তিনি বিশ্বকবি।
তার জন্ম ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫শে বৈশাখ কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে। তার বাবা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মা সারদাসুন্দরী দেবী।
রবীন্দ্রনাথ ছিলেন অভিজাত পরিবারের সন্তান। কিন্তু ১৭ বছর বয়সে দেশের বাইরে লেখাপড়া করতে গিয়ে তিনি পড়া শেষ না করেই দেশে ফিরে আসেন।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে তার প্রথম কাব্য প্রকাশিত হয়। এরপর তিনি সাহিত্যের সকল শাখায় বিচরণ শুরু করেন স্বাচ্ছন্দ্যে। কাব্য, উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, গান- সবকিছুই তিনি লিখেছেন। একাধারে তিনি ছিলেন সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, সুরকার, গীতিকার, নাট্যপ্রযোজক, চিত্রশিল্পী এবং অভিনেতা।
সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থা রবীন্দ্রনাথের ভালো লাগত না। তাই তিনি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে শিক্ষাগ্রহণ করার সুযোগ তৈরি করে দিতে ‘বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য প্রথম বাঙালি হিসেবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।
১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শে শ্রাবণ এই গুণী মানুষটি মৃত্যুবরণ করেন।
আজ বৈশাখ মাসের ২৫ তারিখ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী। আজ আবার মে মাসের দ্বিতীয় রোববার, মা দিবস। মাকে শুনিয়ে দাও মায়ের প্রিয় রবীন্দ্রনাথের কোনো কবিতা বা গান। সেটা একইসঙ্গে হবে মায়ের জন্য একটি চমৎকার উপহার, আর রবিঠাকুরের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা। এভাবেই প্রিয় রবীন্দ্রনাথকে জানাও জন্মবার্ষিকীর শুভেচ্ছা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৬
এএ