অবশ্যই না, তখনই জ্যাক বলে ওঠে। সবার একসঙ্গে বিপদে পড়ার কোনো মানে হয় না।
দুধটুকু কীভাবে ঠান্ডা রাখা যায়? অবাক হয়ে পেগি বলে। দ্বীপে ভীষণ গরম।
আমি ঝরনার পাড়ে দুধের বালতি রাখার গোলাকার ছোট্ট একটা জায়গা বানাবো, তখনই জ্যাক বলে। তারপর, দুধের বালতি ঘিরে সারাদিন ঝরনার শীতল জল বইবে, তাতে করে দুধটুকু ঠান্ডা আর তরতাজা থাকবে।
তোমার মাথায় কত বুদ্ধি, জ্যাক। নোরা বলে।
না, ঠিক তা-না, জ্যাক বলে। কেবল স্বাভাবিক বিচার-বুদ্ধি, এটুকুই। অন্য যে কেউ এভাবেই চিন্তা করতো।
আজ খুব ক্লান্ত লাগছে, হাত-পা টানটান করে মাইক বলে। গত রাতে ডেইজিকে টেনে আনতে ভীষণ খাটতে হয়েছে!
আজ বরং সারাদিন সবাই বিশ্রাম নেই, জ্যাক বলে। সে নিজেও তখন খুবই পরিশ্রান্ত। এই প্রথম বারের মতো আজ আমরা কোনো কাজ করছি না। কেবল শুয়ে বসে বই পড়বো আর গল্প করবো।
বাচ্চারা চমৎকার একটি দিন পার করে। খুব গরম থাকায় সারা দিনে ওরা মোট তিনবার গোসল সারে। নোরা বড় রোলার-টাওয়েল দু’টা লেকের পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করে নেয়। রোদের তাপে তা খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়, তারপর ছেলেরা একটা এবং মেয়েরা একটা তোয়ালে নেয়। ছেঁড়া বস্তার বদলে তোয়ালে দিয়ে গা মুছতে কি যে আরাম!
দুপুরে আমরা মাছ খাচ্ছি, নিচে ছিপের দিকে চেয়ে থেকে, জ্যাক বলে।
এবং কাস্টার্ড! নোরা যোগ করে, সে তখন দুধ আর ডিম দিয়ে কিছু একটা রান্না করছিল।
ঠিক আছে, সকালে কাজ শেষ হওয়ার পর থেকেই ক্ষুধায় পেটটা চোঁ চোঁ করছে! মাইক বলে।
দুপুরটা অলস কেটে যায়। ছেলেরা ঘুমিয়ে পড়ে। নোরা বই পড়ে। পেগি তার সূচি কাজের বাক্সটা বের করে কাজে বসে এবং দীর্ঘক্ষণ ধরে আগের রাতে আনা জ্যাকের পুরাতন কাপড় সেলাই করে। ভাবে শীত নামলে সেগুলো কাজে লাগবে। আশা করছে সে, নোরা এবং মাইক গিয়ে তাদেরও কিছু কাপড় নিয়ে আসতে পারবে।
উঠানে মুরগি ডেকে ওঠে। অচেনা আর একা লাগায় দু’একবার ডেইজিও হাম্বা হাম্বা করে ডেকে ওঠেÑ তবে তাকে নম্রভাবে বসে থাকতে দেখা যায়।
মনে হচ্ছে না ও খুব বেশি হাম্বা হাম্বা করবে, পেগি ভাবে, তার সুই খুব দ্রুত চলছে। হ্রদের দিক থেকে নৌকা করে কেউ এলে হাম্বা হাম্বা করে সেটা সে আমাদের জানিয়ে দেবে। তবে ভাগ্য ভালো যে ওদিক দিয়ে কেউ কখনই আসে না।
বিশ্রামের পর সবার খুব তরতাজা বোধ হয়। সবাই দ্বীপের চারপাশটা ঘুরে আসবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। নোরা মুরগিদের খাবার খাওয়ায়, তারপর ওরা বেরিয়ে পড়ে।
চলবে...
বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১৭
এএ