ভাষা সব সময়ই চায় মায়ের মুখে হাসি থাকুক। ফুলের মতো হাসি।
ভাষা মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে।
আচ্ছা মা, তুমি আমার উপরে রাগ করেছো না? প্রথম হতে পারিনি বলে।
নারে সোনা, রাগ করিনি। তবে পুরোটা খুশি হতে পারিনি।
দেখ না বকুল ক্লাসে প্রথম হয়েছে। কত সুন্দর করে কবিতা আবৃত্তি করতে পারে। সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলে। সবাই তাকে পছন্দ করে। ভালোবাসে। কত সুন্দর করে ইংরেজিতে কথা বলতে পারে।
আমি চাই তুই ও বকুলের মতো হবি। সবাই তোকে ভালোবাসবে।
ভাষা মায়ের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনে।
আচ্ছা, মা। কথায় কথায় ইংরেজি বলতে পারলেই কি সে বেশি ভালো হবে।
আমি তোমাকে একটি প্রশ্ন করি?
বলতো পৃথিবীর কোন ভাষার জন্য মানুষ বুকের রক্ত দিয়েছে?
সেটা কিন্তু ইংরেজি ভাষা না। আমাদের বাংলা ভাষা। আমার মায়ের ভাষা।
বলো ঠিক কি না?
মা বললেন, তা ঠিক।
তাহলে মা বলো, যারা আমার প্রিয় ভাষার জন্য বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছেন, জীবন দান করেছেন সেই ভাষাকে অবহেলা করে, ভিনদেশি ভাষাকে বেশি ভালোবাসি। কথায় কথায় ইংরেজি বলি, হিন্দি গান শুনি।
এটা কি ভালো দেখাবে মা। বলো তুমি?
আর আমি যদি বাংলা ভাষাকে বেশি ভালোবাসি। ভাষার মান বজায় রাখতে চেষ্টা করি। সেটা কি ভালো কাজ নয় মা।
মা কিছুটা সময় চুপ করে থাকেন। তারপরে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান।
খুব ভালো বলেছো মা।
তুমি এই বয়সেই এমন করে ভাবতে পেরেছো। আমার সব অভিমান হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো। গর্বে ভালোলাগায় মনটা ভরে গেলো আজ। আমার মেয়েরও যে এমন অনেক ভালো গুণ আছে। তা আমার জানা ছিল না। আজ জানা হলো।
আমার মনের দুয়ার খুলে গেলো আজ। আমার মেয়েও যে বড়ই গুণবতী মেয়ে।
মা ভাষার কপালে চুমু খান। বুকে জড়িয়ে ধরে বলেন, এই না হলে আমার মেয়ে!
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৮
এএ