শান্তি, সাম্য, অধিকার আর স্বাধীকার ছিল নজরুলের কাব্যিক চেতনার উপদান। তিনি লেখায় হিন্দু-মুসলিম বিভেদের অবসান চেয়েছেন।
ছোটদের অনেক বিষয়েও অসাম্প্রদায়িকরার শিক্ষা দিয়েছেন নজরুল। তার অন্যতম শিশুতোষ গ্রন্থ 'পুতুলের বিয়ে'। এটি এটি নাটক। ছোটদের জন্য নাট্য-আঙ্গিকে রচিত নজরুলের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য লেখনী এই 'পুতুলের বিয়ে'। নজরুল এই একাঙ্কিকায় কয়েকটি শিশু-চরিত্রের মধ্যদিয়ে গভীর জীবনবোধকে শিশু-মনে সঞ্চারিত করে দিতে চেয়েছেন।
কয়েকটি শিশু চরিত্র হচ্ছে কমলি, টুলি, পঞ্চি, খেঁদি, বেগম ইত্যাদি। এতে আমাদের লোকসংস্কৃতির পরিচয় যেমন মূর্ত হয়ে উঠেছে, তেমনই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও আন্তর্জাতিক ভ্রাতৃত্বের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষারও প্রকাশ ঘটেছে। চীনা পুতুল, জাপানি-পুতুল বা ডালিমকুমারের মধ্যদিয়ে সংস্কৃতি-সমন্বয়ের প্রয়াসই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ নাটকে অনেক হাস্যরসাত্মক আয়োজন রয়েছে। রয়েছে সিরিয়াস বিষয়ের অবতারণাও। অসাম্প্রদিয়েকতার চেতনা শিশুমনে ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য কমলির একটি সংলাপ 'বাবা বলেছেন, হিন্দু-মুসলিম সব সমান। অন্য ধর্মের কাউকে ঘৃণা করলে ভগবান অসন্তুষ্ট হন।
এ নাটকের শেষের দিকে একটি গান- ‘মোরা এক বৃন্তে দু’টি ফুল হিন্দু-মুসলমান, মুসলিম
তার নয়নমণি, হিন্দু তাহার প্রাণ......’
'সাম্যবাদী’ কবিতায় লিখলেন-
'গাহি সাম্যের গান-
যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান’
তিনি 'মানুষ' কবিতায় লিখলেন-
'গাহি সাম্যের গান,
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।
নাই দেশ-কাল পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্ম জাতি,
সবদেশে, সবকালে ঘরে ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি'...
এ সমাজে নজরুলের বাণী আমরা কাজে লাগাতে পারি তাহলে শিশুদের মনকে পাপমুক্ত বা সংকীর্ণমনা থেকে মুক্তি দিতে পারবো!
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৩ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৮
এএ