সবাই খুব চুপচাপ আর গম্ভীর। ওরা বুঝতে পারে গুরুতর কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে।
ওরা তাই শোবার জন্য উইলো বাড়িতে যায়। জ্যাক কাপড় ছেড়ে গায়ে পুরাতন একটা ছালা জড়ায়, কারণ তার গায়ে মুরগির কটূগন্ধ লেগে আছে। পেগি বলে পরদিন সে ওর সবকিছু ধুয়ে দেবে। তাদের একজন এবং তারপরে আরো একজন কিছু একটা বলায়, বা একটা প্রশ্ন করায় দীর্ঘসময় ওদের আর ঘুম আসে না। আবারও সবাই কথা বলতে শুরু করে দেয়।
এখন, কেউ আর একটি শব্দও উচ্চারণ করবে না!
শেষে কঠোর স্বরে জ্যাক বলে। আই, আই, ক্যাপটেন! সবাই ঘুমঘুম চোখে বলে। এরপর কেউ আর একটা শব্দও বলে না। সকালে সবাই আগেভাগে জেগে ওঠে। আগের দিনের কথা মনে পড়ে। আগের মতো ওদের আর হাসি-তামাসা, চিৎকার-চেঁচামেচি বা গান গাইবার ইচ্ছে জাগে না। পেগি চুপচাপ সকালের নাস্তা সাজায়। কাপড়-চোপড় কিছুই তখনও ধোয়া হয়নি বলে, জ্যাক তার পুরাতন ওভারকোট গায়ে চাপিয়ে গরুর দুধ দোয়াতে যায়। মাইক ঝরনা থেকে খানিকটা জল নিয়ে আসে, নোরা মুরগিদের খাবার খাওয়ায়। সেদিন সকালের নাস্তা খেতে বসার অনুষ্ঠানটা খুব একটা জমে না।
সবকিছু সাফ করে, পেগি জ্যাকের কাপড় ধুয়ে শুকাতে দেওয়ার পর, ওরা একটি সভার আয়োজন করে।
জ্যাক বলে, দিনের বেলায় সারাক্ষণ কাউকে না কাউকে পাহাড়ের ওপর গিয়ে ওদিকটায় নজর রাখতে হবে। ওখান থেকে হ্রদের সবটা দেখা যায় তাই ওদিক দিয়ে কেউ এদিকে এলে আমরা আগেভাগেই সতর্কবার্তা পেয়ে যাবো। তখন সবকিছু গোছগাছ করার জন্য অঢেল সময় পাওয়া যাবে।
রাতে কি কাউকে পাহারায় রাখা হবে? নোরা জিজ্ঞেস করে।
না, রাতের বেলায় লোকেরা এদিকে আসতে চাইবে না। আমরা শান্তিতে ঘুমাতে পারবো। আমার মনে হয় না কয়েক দিনের মাথায় এদিকে কেউ আসবে, কেননা আমার ধারণা ওরা লেকের পাশটা আগে খুঁজে দেখবে। তারপর দ্বীপের কথা ভাববে।
আমি ভাবছি, কয়েক দিনের মধ্যে যেহেতু মূলভূখণ্ডে যাওয়া হচ্ছে না, তাই, বড় একটা ফুটো করে নৌকাটা ডুবিয়ে দেওয়া যাক, মাইক বলে। সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকি যদি ওটা কেউ খুঁজে পেয়ে যায়, যদিও কাঁটা ঝোপের আড়ালে খুব ভালোভাবেই লুকানো রয়েছে। অন্তত ডুবে থাকলে কেউ সম্ভবত ওকে খুঁজে পাবে না।
চলবে…
বাংলাদেশ সময়: ২১২৯ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০১৮
এএ