ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৯৮) 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৮
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৯৮)  রহস্য দ্বীপ

[পূর্বপ্রকাশের পর]
বাচ্চা তিনটি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। জ্যাক কী বোঝাতে চাইছে? কিন্তু নৌকাটা ভেড়ার পর ক্যাপটেন আর মিসেস আরনল্ড লাফিয়ে নেমে এলে ওরা খুব তাড়াতাড়ি তা বুঝতে পারে! 

মাম্মি! ওহ্, মাম্মি! আর ড্যাডি! বাচ্চারা চিৎকার করে তাদের বাবা মায়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সবাই জড়াজড়ি করে থাকায়, বাচ্চাদের কে কোনটা, তাদের কে বড় বা কে ছোট কিছুই আঁচ করা যায় না।

কেবল জ্যাক আলাদা দাঁড়িয়ে। সে দূরে দাঁড়িয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে ছিল- কিন্তু খুব বেশিক্ষণ নয়। নোরা এসে তার হাত ধরে টেনে তাকেও উত্তেজিত একদল সুখী মানুষের ভিড়ের মাঝে এনে দাঁড় করায়।
তুমিও এর অংশ জ্যাক, সে বলে।  

মনে হচ্ছিল সবাই বুঝি একইসঙ্গে হাসছে আর কাঁদছে। কিন্তু শেষে চারপাশটা এমনই অন্ধকার হয়ে আসে যে ওরা কেউই কাউকে দেখতে পায় না। মাইক সৈকতে একটা লণ্ঠন নিয়ে এলে জ্যাক তাতে আলো জ্বালে। সবাইকে নিয়ে গুহার দিকে রওয়ানা হয়। তার খুব মন চাইছিল ক্যাপটেন আর মিসেস আরনল্ড দেখুক তাদের থাকার জায়গাটা কত সুন্দর।

ওরা সবাই ভেতরে ঢুকে পড়ে। বাইরে উজ্বল আগুনের একটানা পটপট শব্দ, আর ভেতরের উষ্ণ আরামদায়ক গুহা। জ্যাক লণ্ঠনটা ঝুলায় এবং বাচ্চাদের মা বাবার জন্য দু’টি টুল জায়গা মতো রাখে। পেগি দুধ গরম করতে ছোটে। রুটির রোল আর বড়দিনের জন্য তুলে রাখা মাংসের দলা বের করে। চাইছে তার মা দেখুক গুহায় থাকলেও সবকিছু সে কত ভালোমতো করতে পারছে! 

কি চমৎকার একটা ঘর! চারদিকে তাকিয়ে তাক, টুল, টেবিল, বিছানাসহ সবকিছু দেখার পর মিসেস আরনল্ড বলেন। গুহাটা খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আর খুব আরামদায়ক বলে মনে হয়। সবাই খুব মন খুলে কথা বলে! কেবল একটা জিনিসই ক্যাপটেন আর মিসেস আরনল্ডকে রাগিয়ে তোলে-আর তা হলো তাদের সেই হেরিয়েট খালা আর হেনরি খালু কতটা পাষাণ সেই গল্প।  

ওদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে, ক্যাপটেন আরনল্ড বলেন। আর তাদের সম্পর্কে তিনি কেবল এটুকুই বলেন।

সেই রাতে ডেইজি খুব জোরে হাম্বা হাম্বা করে ডেকে ওঠে। একরাতে এই অসহায় ডেইজিকে নৌকার পেছনে সাঁতরে দ্বীপে আসতে হয়েছে এমন একটা গল্প শুনে তিনি চোখে জল আসার আগপর্যন্ত অট্টহাসি হাসেন! আর যখন শোনেন ওদের খোঁজে আসা লোকগুলোকে ডেইজি কীভাবে চিৎকার করে হাম্বা ডেকে ভড়কে দিয়েছিল; এরপর তিনি আরো জোরে হেসে ওঠেন!

তোমাদের এসব রোমাঞ্চকর ঘটনা নিয়ে কাউকে একটা বই লিখতে হবে, তিনি বলেন। জীবনে কখনও আমি এ ধরনের কিছু শুনিনি। আমাদের দ্বীপের ঘটনাতেও এধরনের শিহরণ ছিল না! কেবল একটা নৌকা গিয়ে তুলে আনার আগপর্যন্ত আমাদের স্থানীয়দের সঙ্গে থাকতে হয়েছে! সত্যিই খুব একঘেঁয়ে!

ঠিক সেই মুহূর্তে জ্যাক অদৃশ্য হয়ে যায় ও কিছুক্ষণ পর প্রকাণ্ড একটা গুল্মের বোঝা মাথায় করে ফিরে আসে। সেটা কোণার দিকে ছুড়ে ফেলে।  

আজ রাতে আপনি আমাদের সঙ্গে থাকবেন, কি থাকবেন না ক্যাপটেন? সে বলে। আমারা আপনাকে এখানে পেলে খুব খুশি হবো। দয়াকরে আমাদের সঙ্গে থাকুন।

অবশ্যই! ক্যাপটেন আরনল্ড লেন। এবং মিসেস আরনল্ড তার কালো মাথাটা ঝাঁকান। আমরা সবাই গুহার ভেতর একসঙ্গে থাকবো, তিনি বলেন। তারপর আমরা তোমাদের রহস্য দ্বীপে সামান্য একটু ভাগ বসাবো বাচ্চারা। জানবো এটা আসলে কেমন।  

তাই সেই রাতে বাচ্চারা তাদের সঙ্গে দ্বীপে থাকার জন্য মেহমান হিসেবে এই দু’জনকে পেয়ে গেলো! শেষে তারাও উত্তেজনা, সুখ আর ক্লান্তি নিয়ে তদের গুল্মের বিছানার ওপর ঘুমিয়ে পড়ে। কালকে ভোরে নিজেদের বাবা-মায়ের পাশে ঘুম থেকে জেগে ওঠার সময় কতই না মজা হবে!

চলবে…

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।