ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

পাখি চিনি-৭

মহাদর্জি পাখি মোচাটুনি

ইচ্ছেঘুড়ি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২০
মহাদর্জি পাখি মোচাটুনি

সুচালো ঠোঁটের ছোট্ট পাখিটির নাম মোচাটুনি। কলাগাছের ফুল ফুটলে এরা আসবেই। কলাবাগান থেকে কলাবাগানে ছুটে বেড়াবে মধু খাওয়ার লোভে। বাসাও করে কলাপাতার তলায়। বসতেও ভালোবাসে কলাপাতার উপরে। কলার মোচায় এরা চমৎকার ভঙ্গিতে বসে। কলাফুলের কাছে এরা সুন্দর হোভারিং (শূন্যে স্থির থেকে ওড়া) করতে পারে।

সুচালো ঠোঁট ফুলের ভিতর ঢুকিয়ে মধুপান করে অবাক কৌশলে। এদের নাম তাই মোচাটুনি।

কলাটুনিও বলা হয়। পাহাড়-সমতল সব জায়গায় পাওয়া যায়। তবে পুরোপুরি কলাগাছ নির্ভর পাখি।  

মোচাটুনির ইংরেজি নাম Little Spider Hunter বা ছোট মাকড়সাভুক। সব ধরনের মাকড়সাই এদের প্রিয় খাবার। এরা অত্যন্ত চঞ্চল, ভীতু স্বভাবের পাখি। মোচাটুনি দেখতে মৌটুসি, নীলটুনির মতো। আকারে একটু বড়। শরীরের মাপ ঠোঁটসহ ১৫ সেন্টিমিটার। শুধু ঠোঁটটিই ৫ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ গোটা শরীরের তিনভাগের একভাগ। ঠোঁটের গড়ন চমৎকার- আগার দিকটা বুকের দিকে কিছুটা বাঁকানো। রং কালচে সবুজ। এদের বুক-পেটের দু’পাশসহ লেজের গোড়াটায় হলুদ রং বেশি। মাথা-গলা-পিঠ জলপাই সবুজ। লেজের আগায় সাদাটে ভাব। পা কালচে।  

ফুলের মধু, মৌমাছি, মাকড়সা, মাকড়সার ডিমসহ নানা রকমের পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ খায়। নারকেল ফুলে যখন মৌমাছি বসে তখন এরা ওই মৌমাছিও ধরে খায়। নারকেল ফুলের রেণু ও মধু এদের খুব পছন্দ।  

বাসা বাঁধে পৌষের শেষ থেকে আষাঢ়ের প্রথম দিকে। কলাপাতার তলায় মাচাং এর মতো করে বাসা বানায়। মানকচুর পাতা, কাঠবাদামের কচি পাতার তলায়ও বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে সাধারণত দু’টি। দু’টি পাখিতে পালা করে তা দেয়। ডিম ফোটে ১৫-১৭ দিনে। ছানারা উড়তে শেখে ১৯-২৩ দিনে। দর্জিরা যে কৌশলে হাতের দু আঙুলে সুতোর মাথায় গিঁট দেয়, এরাও ঠোঁট ও জিভ ব্যবহার করে সুতোর মতো উপকরণের মাথায় গিঁট দিতে পারে। টুনটুনি যদি হয় দর্জিপাখি এরা হলো মহাদর্জি পাখি।

তথ্যসূত্র: বাংলাদেশের পাখি, শরীফ খান

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২০
এএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।