পাহাড়-টিলাময় গভীর জঙ্গলই এদের পছন্দ। নিরিবিলি থাকতে পছন্দ করে।
এককালে দেশের বৃহত্তর সিলেট ও চট্টগ্রামে ছিল। এখন বিলুপ্তির পথে। সুন্দর এ পাখিটির নাম কাঠময়ূর বা কাঠমৌর।
এদের ইংরেজি নাম Grey peacock। বৈজ্ঞানিক নাম polyplectron bicalcaratum। পুরুষ পাখিটি লেজসহ ৬৪ সেন্টিমিটার। মেয়েটির মাপ ৪০-৪৮ সেন্টিমিটার। ময়ূর ও মথুরার জাতভাই। ওজন হয় ৬০০-৭০০ গ্রাম।
ময়ূর গোত্রের পাখিদের মধ্যে পুরুষরা সুন্দর বেশি। পুরুষ পাখিটির মাথায় ঝুঁটি থাকে। মেয়েটির নেই। গাছের কচি পাতা, ফুলের কুঁড়ি, নানান রকম ঘাসের বীজ, পাকা ডুমুর, জাম, পোকামাকড়, ছোট গিরগিটি,, তক্ষক, সাপের বাচ্চা, কেঁচো, শামুক, মাছ, কাঁকড়া প্রভৃতি খায়। সুযোগ পেলে ছোট কোনো পাখির ডিম বা বাচ্চাও খেয়ে ফেলে। বাঁশফুল ও ফল এদের প্রিয় খাবারের তালিকায়।
বিচিত্র স্বরে ডাকতে পারে এরা। স্বাভাবিক ডাক পোষা মোরগ-মুরগির মতোই মনে হবে। তবে স্বরটা একটু চড়া ও কড়া। ভয় পেয়ে যখন ডাকে বা শত্রু দেখে বনবাসীকে খবর দেয় তখন কণ্ঠটা পোষা তিতিরের মতো মনে হয়।
ডিম পেড়ে বাচ্চা তোলার জন্য মাটির উপর বাসা করে এরা। সমান মাটি পছন্দ নয়। পা দিয়ে আঁচড়ে গর্ত করে বাঁশপাতা বিছিয়ে নেয়। মেয়েটি একাই বাসা সাজায়। তবে বৃষ্টি নামলে বা শিলাপাতের সময় মেয়েটির পাশে গিয়ে পুরুষটিও ডিম-ছানা রক্ষা করে।
৩-৫টি চকচকে ডিম পাড়ে। ২২-২৫ দিন তা দেওয়ার পর বাচ্চা ফোটে। মা পাখি ১২-১৫ ঘণ্টা ছানাদের বুকের ওমে রাখে। ছোট ছানা দেখেতে মুরগি ছানার মতোই। মা মুখে খাবার তুলে দেয় না। খাবার দেখিয়ে দেয় অথবা জ্যান্ত খাবার মেরে সামনে দেয়। শত্রুর আগমনে লুকাতে ওস্তাদ এরা।
প্রয়োজনে এরা অতি দ্রুতবেগে দৌড়াতে পারে নিঃশব্দে। রাতের আশ্রয়ের জন্য পছন্দ বাঁশবাগান। এরা সহজে শত্রুর সামনে পড়তে চায় না। তবু দেশ থেকে সুন্দর এ পাখিটি বিলুপ্তপ্রায়।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২
এনএইচআর