ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ইউএনওদের নিয়ে হাইকোর্টের আলোচিত রায় চেম্বারে স্থগিত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২৩
ইউএনওদের নিয়ে হাইকোর্টের আলোচিত রায় চেম্বারে স্থগিত

ঢাকা: উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন— উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারার এমন বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় ৫ জুন পর্যন্ত  স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি নিয়ে বুধবার (৫ এপ্রিল) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী।   

এর আগে গত ২৯ মার্চ উপজেলা চেয়ারম্যানদের পৃথক তিনটি রিটে জারি করা রুল আংশিক মঞ্জুর করে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

হাইকোর্টে পৃথক রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি, হাসান এম এস আজিম ও আইনজীবী মো. মিনহাদুজ্জামান লিটন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

আইনের ৩৩ (১) ধারায় বলা হয়েছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন এবং তিনি পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন। (২) পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিপালন এবং বিধি মাধ্যমে নির্ধারিত অন্যান্য কার্যাবলী পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সম্পাদন করবেন।

আইনের এই বিধানসহ কিছু বিষয় নিয়ে উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও দুমকী উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ ও অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মনোহরদী উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খান, গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রিনা পারভীন, কালিয়াকৈর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম আহম্মেদ ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা আক্তার ২০২০ সালে ৭ ডিসেম্বর এ রিট করেন।

ওই বছরই আগস্টে উপজেলা পরিষদ আইনের ২৯ ও ৩৩ ধারা চ্যালেঞ্জ করে আরেকটি রিট করেন বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মিনহাদুজ্জামান লিটন।

আর আইনের ৩৩ সহ আরও কিছু বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালের ১৫ জুন আরেকটি রিট করেন পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আজিজসহ তিন উপজেলা চেয়ারম্যান।

এসব রিটের পর হাইকোর্ট পৃথক রুল জারি করেন। রুল জারির পরে আইনজীবী হাসান এম এস আজিম বলেছিলেন, উপজেলা পরিষদে একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থাকা সত্ত্বেও একজন নির্বাহী কর্মকর্তাকে বেশি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটা সাংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

সব রুলের শুনানি শেষে ১৫ জানুয়ারি রায়ের জন্য ২৯ মার্চ দিন রাখা হয়। সে অনুসারে ২৯ মার্চ বুধবার রায় ঘোষণা করা হয়।

রায়ের পরে হাসান এম এস আজিম সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন, এটা অবৈধ। চিঠিপত্রে উপজেলা প্রশাসন ব্যবহার করে, এখন আর উপজেলা প্রশাসন ব্যবহার করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ ব্যবহার করতে হবে। ইউএনও সাচিবিক দায়িত্ব পালন করলেও তিনি উপজেলা পরিষদের কাছে জবাবদিহির মধ্যে থাকবেন। ২০১০ সালে ১৭টি বিভাগ হস্তান্তরিত হয়েছিল তার মধ্যে উপজেলা পরিষদও হস্তান্তরিত হয়েছে। ইউএনওর হস্তান্তরিত দায়িত্ব পালনের জন্য চার্টার অব ডিউটিজ আছে। তিনি এগুলো করবেন। এর উপরে এসে ৩৩ ধারায় তাকে একচ্ছত্র আধিপত্য দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্ট বলছেন, এটি বাতিল। একচ্ছত্র থাকতে পারবে না। ইউএনওকে উপজেলা পরিষদের অধীনে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সাচিবিক দায়িত্বের সঙ্গে ওনাকে একচ্ছত্র আধিপত্য দেওয়া হয়েছে। মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এবং আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিপালন ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এখন ২০১০ সালের হস্তান্তরিত বিধান অনুসারে ইউএনও কাজ করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২৩
ইএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।