ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

পালানো ফাঁসির ৩ আসামি র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪
পালানো ফাঁসির ৩ আসামি র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জ: কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পলাতক ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিকে নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১১)। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র‍্যাব-১১ এর এএসপি সনদ বড়ুয়া।

এর আগে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) অভিযান চালিয়ে আড়াইহাজারের পাঁচরুখী এলাকা থেকে দুইজন এবং মুক্তারপুর এলাকা তাদের একজনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মোসাদ্দেক ওরফে সাদেক আলী (৩২), মো. জাকারিয়া (৩২), মো. জুলহাস দেওয়ান (৪৫)।   

গ্রেপ্তার আসামি মোসাদ্দেক এবং জাকারিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ২০০৮ সালে আড়াইহাজারের নয়াগাঁও এলাকায় বারেক চৌধুরী নামক এক ব্যক্তির বাড়িতে হাঁস ও মুরগি চুরি হয়।  

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বারেক চৌধুরীর বাড়িতে একটি সালিশ হয়। সালিশে শামীম ভূইয়া, মোসাদ্দেক আলী ও জাকারিয়া চুরির সঙ্গে জড়িত বলে একই গ্রামের ফজলুল মোল্লার ছেলে মো. শামীম সাক্ষ্য দেন। চুরির ঘটনায় সাক্ষী দেওয়ার কারণে ভিকটিম মো. শামীমকে ক্রোধের বশবর্তী হয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৯ মার্চ ২০০৮ সালে রাতে আসামি শামীম ও তার সহযোগী মোসাদ্দেক এবং জাকারিয়া মিলে ভিকটিম মো. শামীমকে নয়াগাঁও গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে ডেকে নিয়ে যায়। আসামি শামীম ভুইয়া ও জাকারিয়া ভিকটিমের হাত-পা চেপে ধরে এবং আসামি মোসাদ্দেক ভিকটিমকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে মরদেহ ফেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিমের বাবা এ ঘটনায় বাদী হয়ে ৩০ মার্চ আড়াইহাজার থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ ১২ জুন ২০১৩ সালে তাদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।

গ্রেপ্তার অপর আসামি মো. জুলহাস দেওয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন আসামি। ঘটনার দিন ভিকটিম সাহাদ অনেক অসুস্থ ছিল। ২০১৪ সালের ১৩ অক্টোবর তাকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাবা জুলহাস মুন্সিগঞ্জের পশ্চিম মুক্তারপুরের নিজ বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে শিশুর বাবা ও সাহাদ নিরুদ্দেশ ছিল। নিখোঁজ থাকার তিন দিন পর মো. জুলহাসে সন্ধান পাওয়া যায়। এ সময় ছেলের কথা জিজ্ঞেস করলে ছেলে হারিয়ে গেছে বলে নানা অজুহাতে আশ্রয় নেয় সাহাদের বাবা। এতে সন্দেহ হলে তাকে মুক্তারপুর পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বাবা স্বীকার করে যে সে সাহাদকে হত্যা করেছে। শিশু পুত্র সাহাদের বাবার স্বীকারোক্তি মতে ১৬ অক্টোবর ২০১৪ সালে সাহাদের মরদেহ নারায়ণগঞ্জ জেলার কয়লাঘাটা এলাকায় একটি মুরগি ফার্মের পাশে ডোবায় পাওয়া যায়। পরবর্তীতে স্ত্রী তানিয়া বেগম বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে দাম্পত্য কলহের জেরে নিজের পাঁচ বছরের সন্তান সাহাদকে হত্যার দায়ে মুন্সিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ ৯ অক্টোবর ২০১৮ সালে বাবা জুলহাস দেওয়ানকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।

এর আগে ৬ আগস্ট বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে থাকা বন্দিরা বিদ্রোহ করে। বিদ্রোহের সময় বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে বন্দিরা চলমান দাঙ্গা-হাঙ্গামার মধ্যে দক্ষিণ অংশের পেরিমিটার ওয়াল ভেঙে গর্ত করতে থাকলে তা প্রতিহত করা হয়। এ প্রতিহতকালীন অন্যদিকে কারা অভ্যন্তরের বৈদ্যুতিক খুঁটি ওপরে ফেলে মই বানিয়ে পশ্চিম দিকের দেওয়াল টপকে দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যে ২০৩ জন বন্দি পালিয়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৪
এমআরপি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।