ঢাকা: দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে নিয়ে কথা বলার আগে দ্বিতীয়বার চিন্তা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি বলেন, বালখিল্য কথা সব জায়গায় মানায় না।
রোববার (২৫ মে) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর সাবেক বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার এবং ফ্যাসিবাদের দোসর উচ্চ ও নিম্ন আদালতের দলবাজ, দুর্নীতিবাজ, বিচারক, আইন কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবিতে এই কর্মসূচি হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট বার ইউনিটের সভাপতি এম বদরুদ্দোজা বাদল। বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সভাপতি জয়নুল আবেদীন, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল প্রমুখ।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দেশের মানুষ অনেক আশা করেছিল যে নতুন ধরনের রাজনীতি আসবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁদের অনেকেই এখনও রাজনীতির মাঠে অনূর্ধ্ব-১৯। অনূর্ধ্ব-১৯ টিম। তাদের ভাবগাম্ভীর্য, কথা, আচরণে রাজনীতির পরিপক্বতা আসে না। তাই মানুষ বলে, ‘দে আর আন্ডার নাইনটিন। ’
তিনি বলেন, ওই দলের একজন সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশ নিয়ে কথা বলেছেন। আমি তার ফেসবুক ব্যাকগ্রাউন্ড দেখলাম, এক সময় তিনি ছাত্রলীগ করতেন। তখন আমার মনে পড়লো যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনিকে, ১৯৭৩ সালে আদালত অবমাননার মামলায় রুল জারি হয়েছিল। পরে তার ছেলে শেখ ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধেও আদালত অবমাননার মামলা হয়েছে। এখন আবার আরেকজন, তিনিও ছাত্রলীগ করতেন। সুতরাং, যিনি এ কথা বলেছেন, তার রাজনৈতিক পরিচয় ওই যুবলীগের মনি-তাপসদের।
কায়সার কামাল আরও বলেন, সময় আছে, থামুন। দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে নিয়ে কথা বলার আগে দ্বিতীয়বার চিন্তা করুন। বালখিল্য কথা সব জায়গায় মানায় না। রাজনীতির মাঠে আন্ডার নাইনটিন হিসেবে অনেক ফাউল করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের ক্ষেত্রে সতর্ক হবেন।
উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ একটা নির্বাচন চায়। আমাদের দল থেকে বলা হয়েছে, যথাসম্ভব একটা নির্বাচন করার জন্য। কিন্তু দুয়েকজন উপদেষ্টার ইতিহাস দেখলে শঙ্কিত হই। কারণ, বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের একজন আছেন, যিনি ১৯৯১ সালে সংসদ নির্বাচন করে ২৪৯টি ভোট পেয়েছিলেন। তিনিও কিন্তু এখন উপদেষ্টা।
প্রসঙ্গত, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে মো. ইশরাক হোসেনকে ঘোষণা করে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী মামুনুর রশিদ। শুনানি শেষে হাইকোর্ট বৃহস্পতিবার সেই রিট সরাসরি খারিজ করে দেন। এই রায় ঘোষণার দিন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রধান মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) মো. সারজিস আলম ফেসবুকে একটি প্রতিক্রিয়া দেন। এই মন্তব্যের মাধ্যমে রাষ্ট্রের এক স্তম্ভ বিচার বিভাগের প্রতি অসম্মান দেখানো হয়েছে বলে এক আইনজীবী সারজিস আলমকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য নোটিশও দিয়েছেন।
ইএস/এমজে