ঢাকা: রাষ্ট্রদ্রোহ, নির্বাচনে অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার জামিন মেলেনি।
বুধবার (২ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ তার জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেন।
এর আগে রাতের ভোটের কথা স্বীকার করে মঙ্গলবার আদালতে স্বীকারোক্তি দেন এম নূরুল হুদা। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এদিন তার পক্ষে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী। বুধবার শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
গত ২৩ জুন প্রথম দফায় চারদিন ও দ্বিতীয় দফায় ২৭ জুন চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সেই রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
এ সময় তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক সৈয়দ সাজেদুর রহমান।
সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
গত ২২ জুন সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ দিন স্থানীয় জনগণ তাকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
এ মামলায় তিনদিনের রিমান্ড শেষে গত ২৯ জুন আরেক সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব ‘পালন না করে’ উল্টো ‘ভয়-ভীতি দেখিয়ে’ জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে গত ২২ জুন শেরে বাংলা নগর থানায় একটি মামলা করে বিএনপি।
পরবর্তীতে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়। মামলায় ২০১৪ সালের নির্বাচনের তৎকালীন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে তৎকালীন সিইসি এ কে এম নূরুল হুদা ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের তৎকালীন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজির আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে এই মামলায়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ওই তিন নির্বাচনে গায়েবি মামলা, অপহরণ, গুম খুন ও নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে, বিএনপি নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার করে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়।
সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সত্ত্বেও সংবিধান লঙ্ঘন, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন, সরকারি কর্মচারী হয়েও অবৈধভাবে ভোটে হস্তক্ষেপ, ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটের কাজ সম্পূর্ণ করা ও জনগণের ভোট না পেলেও সংসদ সদস্য হিসেবে মিথ্যাভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
কেআই/এমইউএম