ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ সফর ১৪৪৭

আইন ও আদালত

এএসপি পরিচয়ে অন্য কেউ জায়গাটা ভাড়া করেছিল: জাফরিন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:০৫, আগস্ট ৭, ২০২৫
এএসপি পরিচয়ে অন্য কেউ জায়গাটা ভাড়া করেছিল: জাফরিন সুমাইয়া জাফরিন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: এএসপি পরিচয়ে অন্য কেউ ভাটারার একটি কনভেনশন হল ভাড়া নিয়েছে বলে দাবি করেছেন মেজর সাদিকুল হকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন।

বৃহস্পতিবার (০৭ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ'র আদালতে রিমান্ড শুনানিকালে তিনি এ দাবি করেন।


  
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির গুলশান বিভাগের পরিদর্শক মো. জেহাদ হোসেন আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে আজিজুল হক দিদার, কাইয়ুম হোসেন নয়ন রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানিতে তারা বলেন, বিদেশি সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থেকে বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার জন্য ভাটারায় একটি কনভেনশন হলে একত্রিত হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন করে দেশ স্বাধীন হয়েছে। দুই হাজার ছাত্র-জনতা প্রাণ হারিয়েছে। কয়েক হাজার আহত হয়েছেন। এখনো অনেকে চিকিৎসাধীন। তারা চুপচাপ বসে নেই। বিদেশি সংস্থার ইন্ধনে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ মিলে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে। ‘অপারেশন ঢাকা ব্লক’ এর নামে ৩০০/৪০০ জন মিলে এসপি পরিচয়ে হল ভাড়া নেন।
 
তারা আরও বলেন, ‘সরকারকে ব্যর্থ করতে জোরালো আন্দোলন করতে নেতাকর্মী সংঘটিত করে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে। এ আসামি এবং তার স্বামী বিপথগামী সেনাবাহিনীর মেজর মিলে এ চক্রান্ত করে। রাষ্ট্র এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল এবং সচেতন। বিপথগামী এ সেনাসদস্যের নেতৃত্বে পলায়নকৃত হাসিনা দিল্লিতে বসে যে প্রেসক্রিপশন দেন, ডিবির সাবেক প্রধান অপারেশন ঢাকা ব্লকের নামে ৪০০/৫০০ জনকে একত্র করে। ৫ আগস্ট এখনো যায়নি, রক্তের দাগ শুকায়নি। বিপথগামী সেনাসদস্য কীভাবে মিটিং করার সাহস পেলো। শাহবাগে গণজমায়েত করে সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা করছিল তারা। তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।

সুমাইয়া জাফরিনের পক্ষে তার আইনজীবী মোরশেদ আলম শাহীন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, বাদী মামলায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, এ ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত। সরকার এতো দুর্বল না, বৈঠক করলো আর উৎখাত হয়ে গেল। মামলার এজাহারে তার নাম নাই। ১১ জুলাই মামলা ও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে গত ৬ আগস্ট। সন্ধিগ্ধ আসামি। কোনো আসামি ১৬৪, ১৬১ এ নাম বলেননি। কোনো আসামি রিমান্ডেও তার নাম বলেননি। সন্ধিগ্ধ হিসেবে গ্রেপ্তার করতে হলে ১৬৪, ১৬১ এ নাম থাকতে হবে। সুস্পষ্ট কারণ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্যও না। আর তিনি যদি অন্যায় করে থাকেন তা তদন্তে আসবে।

এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন সুমাইয়া জাফরিন। তিনি বলেন, কনভেনশন হল এএসপি পরিচয় অন্য কেউ ভাড়া নিয়েছিল। কিন্তু আমার নামে দোষ চাপানো হচ্ছে। কনভেনশন হলে আগে থেকে সবকিছু অ্যারেঞ্জ করা ছিল। আমি আমার স্বামীর সঙ্গে ওখানে গিয়েছিলাম। ওখানে কি ধরনের কাজ হচ্ছিল তা সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। কিছু জানার থাকলে আমাকে জিজ্ঞাস করতে পারেন। আমাকে রিমান্ড দিয়েন না স্যার (বিচারক)। আমি কোনো অন্যায় করিনি।

পরে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

বুধবার (৬ আগস্ট) রাতে ডিবির একটি দল তাকে হেফাজতে নেয়। পরে তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

রাজধানীর ভাটারা এলাকার সংলগ্ন একটি কনভেনশন সেন্টারে গোপন বৈঠক ঘিরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের ২২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ। এ ঘটনায় রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলা করে পুলিশ।

গত ১ আগস্ট আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, ১৭ জুলাই অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাকে তার নিজ বাসস্থান রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে আটক করে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়।

কেআই/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।