ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

দুর্যোগ মোকাবেলায় আইন

ল’ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৫
দুর্যোগ মোকাবেলায় আইন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বাংলাদেশ একটি দুর্যোগ প্রবণ দেশ। নানা দুর্যোগ ও ঝুঁকি মাথায় নিয়েই আমাদের পথ চলা।

নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের জীবন ও সম্পদ।

এসব প্রাকুতিক দুর্যোগের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের উপকূল অঞ্চল। একটি দুর্যোগের ক্ষতিপুষিয়ে উঠতে না উঠতেই আরেকটির ছোবল। সিডর ও আইলার ক্ষত এখনো শুকায়নি।

এক সময় ছিল ঝড়, বন্যা আর জ্বলোচ্ছাস। এখন তার সাথে যোগ হয়েছে খড়া, লবণাক্ততা ইত্যাদি। জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে নানা ধরনের দুর্যোগ আজ নিত্যদিনে সঙ্গী। সুপেয় পানির দুঃস্প্রাপ্যতা আজ প্রকট আকার ধারণ করেছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নেই। কিন্তু এর ক্ষতি মোকাবেলায় আমরা উদ্যোগ নিতে পারি। ভয়াবহতাকে নিয়ন্ত্রণ  করতে পারি। এজন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন যথাযথ জ্ঞানের। বেচেঁ থাকার জন্যই এ জ্ঞান। এবছর আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমণ দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল: “জীবনের জন্য জ্ঞান”।

দুর্যোগ প্রশমণে স্থানীয় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে তাদের প্রচলিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা এ ঝুঁকি হ্রাস করতে পারি। এছাড়া আধুনিক জ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের আরো সাহসী করে তুলতে পারে।

সম্প্রতি যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তার অন্যতম এজেন্ডা জলবায়ু। কাজেই উন্নয়নের সে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে হলে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়টির দিকে আমাদের নজর দিতে হবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ এর আগের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা অর্জনে উল্লেখ্যযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্য বিশেষভাবে প্রশংসতি হয়েছে।

পরিবেশ বিষয়ক যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়ছে তার প্রথমেই আছে পরিবেশের  সাথে খাপ খাইয়ে চলার দক্ষতা অজর্ন। বিশ্বের সব রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই এ কথা প্রযোজ্য।

দুর্যোগ মোকাবেলা তথা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশে ২০১২ সালে একটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা আনয়ন ও ব্যবস্থাপনা সমন্বয়ের জন্যই আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে।

এ আইনে ৪১ সদস্য নিয়ে একটি জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল করা হয়েছে যার প্রধান হচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তার সাথে আরো নয়জন মন্ত্রী ও আছেন এ কমিটিতে।

এছাড়া এ কমিটির কাজ হবে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে নীতিমালা ও পরিকল্পনা সংক্রান্ত কৌশলগত দিক-নির্দেশনা প্রদান করা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক আইন, নীতিমালা ও পরিকল্পনার বাস্তবায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করা।

আইনানুযায়ী রাষ্ট্রপতি যদি মনে করেন, তবে তিনি যেকোনো এলাকার দুর্যোগ মোকাবেলা ও ঝুকি হ্রাসের জন্য উক্ত এলাকাকে দুর্গত এলাকা হিসাবে ঘোষণা করতে পারেন। জরুরি অবস্থা মোকাবেলা জন্যই রাষ্ট্রপতি এ ধরণের ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন।

এভাবে কোনো এলাকাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হলে, সর্বোচ্চ দুই মাস পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। এভাবে আইনের মাধ্যমে আরো নানা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা যা সার্বিকভাবে জনগণ ও সরকারকে দুর্যোগ মোকাবেলায় যথাযথ উদ্যোগ নিতে সাহায্য করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।