মঙ্গলবার (১১ জুলাই) শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সমিতির সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
তবে এর কিছুক্ষণ পরে একই স্থানে সমিতির সহ সভাপতি অজিউল্লাহ পৃথক সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। সেখানে বলা হয়, সভাপতি ও সম্পাদকের ওই সংবাদ সম্মেলন ছিল একান্ত ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কোনো রায় হলে তার পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা হওয়া খুবই স্বাভাবিক।
গত ০৩ জুলাই বিচারপতিদের অপসারণে সংসদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া এ রায়ের ফলে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাত থেকে ফের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের (বিচার বিভাগ) হাতে চলে যাচ্ছে।
গত রোববার (০৯ জুলাই) এ রায় নিয়ে সংসদে আলোচনা করেন সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জয়নুল আবেদীন বলেন, রায়ের বিপক্ষে সিনিয়র এমপি-মন্ত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে ‘চরম আপত্তিকর’ বক্তব্য দেন। দু’জন প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন ও ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম সম্পর্কেও ‘আপত্তিকর’ বক্তব্য দেন তারা। এমনকি প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে সমালোচনা করেন। যা সুষ্পষ্ঠ আদালত অবমাননার শামিল।
সংসদে এমপিদের দেওয়া বিভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরে জয়নুল আবেদীন বলেন, সংসদ সদস্যরা সংসদ পরিচালনার রুলস্ অব বিজনেস এবং বিধি-বিধান সম্ভবত ভুলে গিয়েছিলেন। তারা যাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন, তারা কেউ সংসদে উপস্থিত ছিলেন না। বিধি অনুসারে, যিনি সংসদে উপস্থিত নেই, তার বিরুদ্ধে কোনো আলোচনা বা সমালোচনা করা যাবে না।
লিখিত বক্তব্যে সভাপতি আরও বলেন, রায় না পড়ে মন্তব্য করায় অনেকে সংসদ সদস্য থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। জনগণকে অপমান করেছেন।
স্পিকারের কাছে সব বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, ‘দেশের আদালতের প্রতি সকলকে শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, এ রকম কোনো বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি’।
১৯৭২ সালে সংসদের হাতে উচ্চ আদালতের বিচারক অপসারণের বিধান রেখে সংবিধান প্রণয়ন করা হয়। সংবিধান সংশোধনের কারণে এটি প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে চলে যায়। ২০১৪ সালে ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা বাহাত্তর সালের মতোই সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা এক রিট মামলার প্রেক্ষিতে জারি করা রুলের রায়েই গত বছর ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছিলেন হাইকোর্ট। এ রায়টিই বহাল রাখেন সর্বোচ্চ আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৭
ইএস/এএসআর