ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

যথেষ্ট ধৈর্য ধরছি: প্রধান বিচারপতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৭
যথেষ্ট ধৈর্য ধরছি: প্রধান বিচারপতি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (ফাইল ফটো)

ঢাকা: প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, ‘আমরা বিচার বিভাগ ধৈর্য ধরছি, যথেষ্ট ধৈর্য ধরছি’।

নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধিমালার গেজেট প্রকাশের শুনানিতে রোববার (২০ আগস্ট) এমন কথা বলেন তিনি। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ শুনানি শেষে আগামী ০৮ অক্টোবর পর্যন্ত গেজেট প্রকাশের সময় বাড়িয়েছেন।

শুনানির শুরুতে ফের সময়ের আবেদন জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

প্রধান বিচারপতি এ সময় বলেন, ‘গত তারিখে কি কথা ছিলো? আলাপ-আলোচনা করার কথা হয়েছিলো। কার সঙ্গে কে কে থাকবেন?’
 
জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আইনমন্ত্রী’।   আদালত বলেন, ‘সবাই আপিল বিভাগের বিচারপতি। আমরা এতোই ইয়ে হয়ে গেলাম যে, আলোচনা পর্যন্ত করলেন না?’
 
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মিডিয়াতে অনেক কথা বলেন। আদালতে এসে অন্য কথা বলেন। আপনাকে নয়, আপনাদের বলছি। আপনিই বলেন, কবে কি হবে?…..আপনারা ঝড় তুলছেন। আমরা কোনো মন্তব্য করছি?’

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘না, আপনারা করেননি’।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনার চাওয়া মতো আগামী ০৮ অক্টোবর রাখলাম।

এ সময় এ মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম বলেন, ‘আমার আবেদনটির শুনানি করুন’।  

জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা বিচার বিভাগ ধৈর্য ধরছি, যথেষ্ট ধৈর্য ধরছি।   আজকে একজন কলামিস্টের লেখা পড়েছি…সেখানে ধৈর্যের কথা বলা আছে। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট প্রধানমন্ত্রীকে ইয়ে (অযোগ্য) করেছেন। সেখানে কিছুই (আলোচনা-সমালোচনা) হয়নি। আমাদের আরও পরিপক্কতা দরকার’।  

এর আগে ০৬ আগস্ট দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে আলাপ-আলোচনা করার কথা বলেছিলেন সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু এর মধ্যে সরকার ও আদালতের মধ্যে কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি।

গত ৩০ জুলাইও প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত (৩০ জুলাই থেকে ০৩ আগস্ট পর্যন্ত) দুপুর ২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত আমি এবং আপিল বিভাগের বিচারপতিরা আপনাদের (সরকার) সময় দেবো। বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধিমালা নিয়ে আর রশি টানাটানি নয়। আইনমন্ত্রীসহ সরকারের যেকোনো বিশেষজ্ঞ আসবেন, বৈঠকে বসবো। আপনিও থাকবেন’।
 
১৯৯৯ সালের ০২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেনের মামলায় (বিচার বিভাগ পৃথককরণ) ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। আপিল বিভাগের এ নির্দেশনার পর গত বছরের ০৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়।

গত বছরের ২৮ আগস্ট শুনানিকালে আপিল বিভাগ খসড়ার বিষয়ে বলেন, শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিলো ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ। যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী।

এর পরই সুপ্রিম কোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান। গত ১৬ জুলাই প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এ সংক্রান্ত গেজেট শিগগিরই প্রস্তুত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আইনমন্ত্রী। পরে ফের ২৭ জুলাই বিকেলে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে খসড়াটি হস্তান্তর করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

কিন্তু গত ৩০ জুলাই সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির বেঞ্চ আইনমন্ত্রীর দেওয়া খসড়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হলো। তিনি খসড়া দিয়ে গেলেন। আমি তো খুশি হয়ে গেলাম। যদিও খুলে দেখিনি। কিন্তু এটা কী!’

এরপর বৈঠক ডেকেছিলেন আপিল বিভাগ।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।