ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সালমান হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ২০ নভেম্বর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭
সালমান হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ২০ নভেম্বর

ঢাকা: চলচ্চিত্র অভিনেতা সালমান শাহ হত্যা মামলার পুন:তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন পিছিয়ে আগামী ২০ নভেম্বর পুনর্নির্ধারণ করেছেন আদালত।   

গত বছরের ০৭ ডিসেম্বর পুন:তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ধার্য দিনে প্রতিবেদন দাখিল করেনি পিবিআই।

পরে তা পিছিয়ে দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা আক্তারের আদালত।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ জানান,  ‘প্রবাসী রাবেয়া সুলতানা রুবির সাম্প্রতিককালের দেওয়া ভিডিওবার্তার ক্লিপ আদালতে জমা দিয়ে অন্য একটি হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এ মামলার আসামি পলাতক রিজভীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানিয়েছি।  আদালত এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি’।

মামলার বাদিনী সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

১৯৯৬ সালের ০৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিউ ইস্কাটন গার্ডেন এলাকায় সালমান শাহের ভাড়া বাসার ড্রেসিংরুম থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ নামানো হয় বলে পুলিশকে জানান তার স্ত্রী সামিরা। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে  নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রুবি তার ভিডিওবার্তায় সম্প্রতি দাবি করেন, তার স্বামী চ্যাংলিং চ্যাং ওরফে জন চ্যাংকে দিয়ে স্ত্রী সামিরা ও তার পরিবার সালমান শাহকে হত্যা করিয়েছিলেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এই রুবিও তার ছেলে হত্যায় জড়িত বলে এতোদিন ধরে অভিযোগ করে আসছিলেন সালমানের মা নীলা চৌধুরী।

এ ঘটনায় সালমানের বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী রমনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেন। পরে তার আবেদনে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। থানা পুলিশের তদন্তের পর তদন্তের দায়িত্ব পায় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।  

তদন্ত শেষে ‘সালমানের মৃত্যু আত্মহত্যা’ বলে প্রতিবেদন দেয় ডিবি। বাদীপক্ষ ডিবি’র তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দিলে পরবর্তীতে তদন্ত চলে যায় সিআইডির কাছে। সিআইডিও একই প্রতিবেদন দেয়। পরে আদালতের আদেশে এ মামলার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চলে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে।

২০১৪ সালের ০৯ জুলাই দেওয়া বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনেও ‘সালমান খুন হননি’ বলে উল্লেখ করা হয়। ততোদিনে বাদী কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী মারা গেলে মামলাটি চালিয়ে নিতে বাদিনী হন সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী।  

বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের   বিরুদ্ধেও নারাজি দেন সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী। এর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি র‌্যাবকে তদন্তের নির্দেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। কিন্তু ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা মহানগরের প্রধান পিপি আবদুল্লাহ আবু ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন।  

শুনানি শেষে গত বছরের ২৫ আগস্ট র‌্যাবকে তদন্তের নির্দেশ বাতিল করেন ঢাকার ছয় নম্বর বিশেষ জজ আদালত। একইসঙ্গে আদালত বিচার বিভাগীয় প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে সালমান শাহের মায়ের নারাজি আবেদনের পুনরায় শুনানি করতে ঢাকার সিএমএম আদালতকে নির্দেশ দেন।

এ আদেশের পর ঢাকার সিএমএম আদালত সালমান শাহ হত্যা মামলাটি পুনরায় তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন গত বছরের ০৭ ডিসেম্বর।  

সালমান শাহের মৃত্যুর পর তার বাবার বাসা থেকে গ্রেফতার হন রিজভী। মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বাসায় ঢোকার ঘটনায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় করা মামলায় আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন রিজভী। তাতে তিনি বলেন, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেননি, তাকে খুন করা হয়েছে। খুনের বিস্তারিতও জবানবন্দিতে জানান তিনি।

মিথ্যা পরিচয় দিয়ে সালমানের বাবার বাসায় ঢোকার অপরাধে ২০০১ সালে ঢাকার সিএমএম আদালত রিজভীকে দেড় বছরের কারাদণ্ড দেন। গ্রেফতারের পর আদালত থেকে জামিন নিয়ে রিজভী পলাতক রয়েছেন। তবে রিজভীর দেওয়া জবানবন্দি পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় সিআইডি।

সিআইডি’র ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী, ক্যান্টমেন্ট থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাবুদ্দিন, এসআই বদরুল আলম তালুকদার ও এসআই কাইয়ুম চৌধুরী রিজভীকে নির্যাতন ও প্রলোভন দিয়ে জবানবন্দি আদায় করেছেন।

ওই রিজভীকেই গ্রেফতারে সোমবার পরোয়ানা জারির আবেদন জানিয়েছেন বাদীপক্ষ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭
এমআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।