খালেদা জিয়ার পক্ষে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় বৃহস্পতিবার এ আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
তিনি জানান, এ আবেদনের সঙ্গে জামিনও চেয়েছেন খালেদা জিয়া।
সাজা বৃদ্ধিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে গত বছরের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদার সাজা ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।
এছাড়া ৫ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে খালেদা জিয়া এবং ১০ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে কাজী কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের আপিল খারিজ করেছেন আদালত।
গত বছরের ৩০ জুলাই আপিল নিষ্পত্তিতে মেয়াদ ৩১ জুলাই থেকে বর্ধিত করে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত করেছিলেন আপিল বিভাগ।
এ রায়ের আগের দিন গত ২৯ অক্টোবর পুরান কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত–৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।
একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয়মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই সাজা হয়েছে মামলার অপর তিন আসামিরও।
১৮ নভেম্বর রোববার ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেছেন খালেদা জিয়া। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান মামলাটিতে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।
একই সঙ্গে খালেদার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। সেই থেকে কারাবন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া।
পরে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ওই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া আপিল করেন।
২২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করেন আদালত। এরপর ৭ মার্চ অপর আসামি মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামালের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।
পরে ২৮ মার্চ খালেদার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল দেন হাইকোর্ট। ১০ মে আরেক আসামি শরফুদ্দিনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছিলেন আদালত।
এই মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করে জামিন আবেদনের পর খালেদা জিয়াকে ১২ মার্চ চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট।
এর বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের পর গত ১৬ মে তা বহাল রেখে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। গত ১২ জুলাই এ আপিল শুনানি শুরু হয়।
এ মামলায় ছয় আসামির মধ্যে খালেদা জিয়াসহ তিনজন কারাবন্দি। বাকি তিন আসামি পলাতক। খালেদা জিয়া ছাড়া বাকি দু’জন হলেন- মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।
পলাতক তিনজন হলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
খালেদাসহ আসামিদের আপিল, দুদকের আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ৩০ অক্টোবর রায় দেন হাইকোর্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৯
ইএস/এমএ