রোববার (২৪ মার্চ ) পলাতক আসামি ফারুক হাওলাদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভুঁইয়া আগামী ২৫ এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
রূপনগর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) পুলিশের উপ-পরিদর্শক আলতাফ হোসেন বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (পশ্চিম) ইন্সপেক্টর সিরাজুল ইসলাম দুইজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আসামিরা হলেন, শাহ আলম ও ফারুক হাওলাদার। শাহ আলম গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। ফারুক পলাতক রয়েছেন, তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এ মামলায় ২১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। মারা যাওয়া দুই অভিযুক্তকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন—জাকির হোসেন ও এনামূল হক। এরা গত ২৬ জুলাই পালাতে গিয়ে ডিবি পুলিশের গুলিতে নিহত হন।
গত ১৯ (ফেব্রুয়ারি) মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু সেদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। এজন্য একই আদালত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৪ মার্চ পরবর্তী দিন ধার্য করেছিলেন।
২০১৭ সালের ২১ জুন রাজধানীর রূপনগর থানার মিরপুর বেড়িবাঁধের রাস্তার পাশ থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন রাতেই নিহতের ছোট ভাই মাসুম তালুকদার রূপনগর থানায় এসে এএসপি মিজানুর রহমান তালুকদারের লাশ হিসেবে তা শনাক্ত করেন। অজ্ঞাত নামাদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন তিনি।
এ ঘটনায় ছিনতাইকারী মিন্টু, কামাল ওরফে ফারুক, জাকির ও শাহ আলম গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতাররা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। একই সঙ্গে এএসপি মিজান হত্যার বর্ণনাও দিয়েছেন তারা।
জবানবন্দিতে তারা বলেন, গত ২১ জুন ফজরের নামাজের আজানের পর উত্তরার তিন নম্বর সেক্টরে একটি মসজিদের পাশে প্রাইভেটকারে যাত্রীবেশে বসেছিলেন তারা। এ সময় এএসপি মিজানুর রহমান ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন ছিনতাইকারীরা তাকে গাড়িতে তুলে নেয়।
পরে ছিনতাইকারী ফারুক বুঝতে পারেন মিজানুর সরকারি সংস্থার লোক। এ অবস্থায় তারা গাড়িতে প্রচণ্ড শব্দে গান ছেড়ে ও আলো বন্ধ করে গাড়ি চালিয়ে যান। জসীমউদ্দিন রোড হয়ে প্রথমে হাউজ বিল্ডিং ও পরে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের দিকে যায় গাড়িটি।
গাড়ির পেছনের সিটে বসা মিন্টু একপর্যায়ে এএসপি মিজানের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। পেছনের সিটে বসা আরও দু’জন ফারুক ও মিন্টু এএসপি মিজানের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করছিলেন। একজন গাড়িতে থাকা ঝুট কাপড়ের ফিতা দিয়ে মিজানুরের গলা পেঁচিয়ে ধরে রাখেন। কিছুক্ষণ পর মিজানুর নিস্তেজ হয়ে পড়েন এবং তার সাড়া-শব্দ না পেয়ে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যান। পুলিশের ভয়ে তারা ১০ নম্বর সেক্টর থেকে গলি পথ ধরে বেড়িবাঁধ এলাকায় মিজানের মরদেহ ফেলে পালিয়ে যান।
বালাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৯
এমএআর/এমজেএফ