মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী কোনো স্বাক্ষী না আসায় সময়ের আবেদন করলে আদালত আবেদন মঞ্জুর করে নতুন দিন নির্ধারণ করেন।
গত বুধবার (৩ এপ্রিল) নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির প্রোভিসিসহ দুইজনের সাক্ষ্যগ্রহণ, জবানবন্দি ও জেরা শেষে ৯ এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির প্রোভিসি অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন আহসান তার জবানবন্দিতে জানান, তার স্ত্রী নাসিমা আক্তারের নামে বসন্ধুরা আবাসিক এলাকায় বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে সন্ত্রাসীরা ভাড়া থাকতেন, ঘটনার আগে তারা যে সন্ত্রাসী তা তিনি জানতেন না। ঘটনার পর বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের ছবি দেখে তিনি তাদের চিনতে পারেন।
আরেক সাক্ষী মতিয়ার রহমান জানান, নিহত সন্ত্রাসী তানভির কাদের চৌধুরী তার প্রতিবেশী ছিলেন, বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে ছবি দেখেই তাকে চিনতে পারেন তিনি।
এ মামলায় ২১১ জন সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। গত ২৭ মার্চ এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন শাহআলী থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন মিয়া।
সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আসামি মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন, শফিকুল ইসলাম ওরফে খালেদ, হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা, ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী ও হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এর আগে গত ২১ মার্চ হামলার ঘটনায় নিহত তৎকালীন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিনের স্ত্রী রেনকিমসহ পাঁচজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। অন্য সাক্ষীরা হলেন— শরিফুল, আ. সবুর খান, নুরজাহান ও দাউদ।
গত ৬ ফেব্রুযারি নিহত এসি রবিউল ইসলামের ছোট ভাই শামসুজ্জামান ও খালাতো ভাই আনোয়ার হোসেন এবং রেস্তোরাঁর ক্রেতা নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিমের স্ত্রী শারমিনা পারভীন সাক্ষ্য দেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের ওপর গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। হামলায় ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন নিহত হন।
এরপর ৪ জুলাই গুলশান থানার এসআই রিপন কুমার দাস বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
২০১৮ সালের ২৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। একই বছরের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করার পর গত ৪ ডিসেম্বর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এ মামলার আসামিরা হলেন— হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত
কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা, ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ।
২০১৮ সালের ৮ আগস্ট আট আসামির বিরুদ্ধে আদালত চার্জশিট গ্রহণ করার পর ২৬ নভেম্বর এ মামলার বিচার কাজ শুরু হয়।
সম্প্রতি এ মামলার পলাতক আসামি মামুনুর রশিদ ওরফে রিপনকে গত ১৯ জানুয়ারি রাতে গাজীপুরের বোর্ডবাজারের একটি বাস থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। আর শরিফুল ইসলাম ওরফে আব্দুস সবুর খানকে ২৫ জানুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থেকে গ্রেফতার করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৯
এমএআর/এমজেএফ