বুধবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী তিন জন সাক্ষীকে হাজির করেন। তাদের সাক্ষ্যগ্রহণের পর পরবর্তী নতুন তারিখ ধার্য করেন আদালত।
বুধবার যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন তারা হলেন- আনোয়ারুল আজিম, মমতাজ পারভীন ও রিনা খানম। তাদের বাড়িতে বিভিন্ন নামে আসামিরা ভাড়া থাকতেন। ঘটনার পর টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের ছবি দেখে তারা আসামিদের চিনতে পারেন।
গত ৩ এপ্রিল নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির প্রোভিসি অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন আহসান তার জবানবন্দিতে জানান, তার স্ত্রী নাসিমা আক্তারের নামে বারিধারার একটি এলাকায় যে বাড়ি রয়েছে, তার একটি ফ্ল্যাটে সন্ত্রাসীরা ভাড়া থাকতেন। ঘটনার আগে তারা যে সন্ত্রাসী তা তিনি জানতেন না। ঘটনার পর বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে তাদের ছবি দেখে তিনি সন্ত্রাসীদের চিনতে পারেন।
আরেক সাক্ষী মতিয়ার রহমান জানান, নিহত সন্ত্রাসী তানভির কাদের চৌধুরী তার প্রতিবেশী ছিলেন। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে ছবি দেখেই তাকে চিনতে পেরেছেন।
এ মামলায় ২১১ জন সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। গত ২৭ মার্চ এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন শাহআলী থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন মিয়া।
সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আসামি মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন, শফিকুল ইসলাম ওরফে খালেদ, হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা, ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী ও হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এর আগে, হামলার ঘটনায় নিহত তৎকালীন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিনের স্ত্রী রেনকিমসহ পাঁচজন সাক্ষ্য দিয়েছেন গত ২১ মার্চ। অন্য সাক্ষীরা হলেন শরিফুল, আ. সবুর খান, নুরজাহান ও দাউদ।
জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহত এসি রবিউল ইসলামের ছোট ভাই শামসুজ্জামান ও খালাতো ভাই আনোয়ার হোসেন এবং রেস্তোরাঁর ক্রেতা নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিমের স্ত্রী শারমিনা পারভীন সাক্ষ্য দেন গত ৬ ফেব্রুয়ারি।
২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের ওপর গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। হামলায় ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন নিহত হন।
এ ঘটনায় বাদী হয়ে ৪ জুলাই মামলা দায়ের করেন গুলশান থানার এসআই রিপন কুমার দাস।
২০১৮ সালের ২৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। একই বছরের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করার পর গত ৪ ডিসেম্বর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৯
এমএআর/একে/এইচএ/