রোববার (২১ এপ্রিল) সকালে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহম্মদের আদালতে তাকে হাজির করা হয়। বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে তার জবানবন্দি রেকর্ড শেষ হয়।
জবানবন্দি রেকর্ড শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম বিভাগের স্পেশাল পুলিশ সুপার মো. ইকবাল।
এসময় তিনি বলেন, জোবায়ের আদালতে স্বীকারোক্তি দেন। সে ঘটনার দিন কিলিং মিশনে সরাসরি অংশগ্রহণ করে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয় এবং মেসের কাঠির মাধ্যমে আগুন ধরিয়ে দেয়।
তিনি আরও বলেন, জবানবন্দিতে জোবায়ের এ হত্যার বিষয়ে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। কিন্তু মামলার তদন্তের স্বার্থে তা উল্লেখ করা যাবে না। এর আগে ১০ এপ্রিল জোবায়েরকে সোনাগাজী থেকে গ্রেফতার করা হয়। ১১ এপ্রিল একই আদালত তাকে পাঁচদিনের রিমান্ড দেন। জুবায়ের নুসরাতের সহপাঠী ছিলো এবং সোনাগাজী পৌর শহরের আবুল বাশারের ছেলে।
মামলার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীমের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে আসে জোবায়ের কথা। শামীম বলেছেন, নুসরাতকে মেঝেতে শুইয়ে ফেলার পর জোবায়ের নুসরাতের ওড়না দুই টুকরো করে তার হাত ও পা বেঁধে ফেলেন।
এদিকে, শনিবার (২০ এপ্রিল) জোবায়েরকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পিবিআই। এ ঘটনায় ব্যবহারিত বোরকা উদ্ধার করা হয় খাল থেকে।
গত ৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত আলিমের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে গেলে মাদ্রাসায় দুর্বৃত্তরা গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় দগ্ধ নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাঁচদিন থাকার পর ১০ এপ্রিল রাতে মারা যায়।
পরদিন ১১ এপ্রিল বিকেলে তার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো চার/পাঁচজনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। ১০ এপ্রিল থেকে মামলাটির দায়িত্ব পায় পিবিআই। সেই থেকেই গ্রেফতার হতে থাকে আসামিরা। এ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ২০ জন আসামি। আদালতে জবাবন্দি দিয়েছেন সাতজন।
আরও পড়ুন
** নুসরাত হত্যাকাণ্ড: আসামি জোবায়েরকে আদালতে হাজির
** নুসরাত হত্যার অন্যতম আসামি মকসুদকে আ’লীগ থেকে অব্যাহতি
** স্বজন-সতীর্থদের চোখের জলে চিরশায়িত নুসরাত
** নুসরাতের জানাজায় জনতার স্রোত
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৯
এসএইচডি/আরবি/