বুধবার (১৯ জুন) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ ৩০ জুলাই তাকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি।
তলবাদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আল আমিন সরকার।
বুধবার (১৯ জুন) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইনজীবী আদালতে জানান, প্রকাশিত গ্রন্থে ত্রুটি ধরা পড়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর গ্রন্থটি বিতরণ বন্ধের নির্দেশ দেন এবং এটি রিভিউয়ের জন্য ডেপুটি গভর্নরের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেন। কিন্তু রিটে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
এরপর আদালত রিট আবেদনকারীকে তলব করেন।
গ্রন্থটি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা ওঠার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এক ব্যাখ্যায় বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি তৈরি ও প্রকাশনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২০১৩ সালের জুন মাসে। এ বিষয়ে তখন উপদেষ্টা কমিটি ও সম্পাদনা নামে দু’টি কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটি দু’টি পাণ্ডুলিপি চূড়ান্তের পর গ্রন্থটি ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটি প্রকাশনার পরপরই এতে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যত্যয় পরিদৃষ্ট হলে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর গ্রন্থটির বিতরণ বন্ধের নির্দেশ দেন এবং গ্রন্থটি রিভিউয়ের জন্য একজন ডেপুটি গভর্নরের নেতৃত্বে একটি রিভিউ কমিটি গঠন করেন।
এর মধ্যে ড. কাজী এরতেজা হাসানের রিটের পর গত বছরের ২ অক্টোবর রুল জারি করে এ ঘটনা তদন্তে অর্থ সচিবকে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এ আদেশ অনুসারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অর্থ বিভাগ) ড. মো. জাফর উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনের মতামত অংশে বলা হয়, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ব্যাংকের নামকরণ করেন। ...গ্রন্থটির দ্বিতীয় অধ্যায়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিবৃত রয়েছে। এ কারণে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা অত্যাবশ্যক ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট বঙ্গবন্ধুর ছবি খুঁজে পাওয়া যায়নি- এ যুক্তিতে বঙ্গবন্ধুর ছবি বইয়ে অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। গ্রন্থটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অন্তর্ভুক্ত না করায় ইতিহাস বিকৃত হয়েছে মর্মে কমিটি মনে করে। ’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গ্রন্থটিতে তদানীন্তন পকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ও তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান গভর্নর মোনায়েম খানের ছবি সংযোজন না করা শ্রেয় ছিল এবং সেটি সবার ভুল মর্মে বইটির সম্পাদক স্বীকার করেন।
এরপর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি গ্রন্থটির সম্পাদককে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট।
১২ মার্চ মঙ্গলবার এ বি এম আলতাফ হোসেন বলেছিলেন, আদালত প্রকাশিত ওই বইগুলো কী করা হয়েছে, তা হলফনামা আকারে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া পরবর্তী তারিখ রেখেছেন ৯ এপ্রিল। আর ইতিহাস বিকৃতির দায় স্বীকার করে শুভঙ্কর সাহা নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন।
৯ এপ্রিল মঙ্গলবার এবিএম আলতাফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ওনারা আজ হলফনামা দাখিল করেছেন। আদালত শুনানি শেষে রায়ের জন্য দিন রেখেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৯
ইএস/এএ