রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) এ আবেদন গ্রহণ করে কার্যতালিকায় রাখার আদেশ দিয়েছেন বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি এএসএম আব্দুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, আইনজীবী নিতাই রায় চৌধুরী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও ব্যারিস্টার মীর হেলাল।
পরে ব্যারিস্টার মীর হেলাল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা জামিন আবেদন দাখিল করেছি। আশা করছি, এ সপ্তাহে শুনানি হবে। যদি না হয়, আগামী সপ্তাহে কার্যতালিকায় আসবে ও শুনানি হবে।
তিনি বলেন, আদালত আমাদের আবেদন গ্রহণ করে বলেছেন, যেদিন ‘পেন্ডিং আপিলের’ জামিন শুনানি আসবে, ওইদিন এটি কার্যতালিকায় থাকবে।
গত ৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদা জিয়ার এ আবেদন দাখিল করা হয় বলে জানিয়েছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
এর আগে, ৩১ জুলাই বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।
গত ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, অর্থদণ্ড স্থগিত ও সম্পত্তি জব্দের ওপর স্থিতাদেশ দিয়ে দুই মাসের মধ্যে ওই মামলার নথি তলব করা হয়।
এরপর, ২০ জুন বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। গত বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করা হয়।
২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫র বিচারক মো. আখতারুজ্জামান জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে, তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সাজা হয়েছে মামলার অপর তিন আসামিরও।
দণ্ডপ্রাপ্ত বাকি তিনজন হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এর মধ্যে, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছর কারাদণ্ড পেয়ে বন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। পরে, আপিলের পর হাইকোর্টে তা বেড়ে ১০ বছর হয়। হারিছ চৌধুরী পলাতক রয়েছেন।
অপর দুই আসামি মুন্না ও মনিরুল দীর্ঘদিন জামিনে থাকলেও সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
চারজনের বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষণার পাশাপাশি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের টাকায় খালেদা জিয়ার নামে কাকরাইলে কেনা ৪২ কাঠা জমি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন আদালত।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। এ ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দুদকের পক্ষে এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। তবে, শুনানি চলাকালে একাধিকবার আদালতে হাজির হতে অনিচ্ছা দেখিয়েছিলেন খালেদা জিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৯
ইএস/একে