ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

থানা হেফাজতে মৃত্যু: এসআই জা‌হি‌দের জা‌মিন নামঞ্জুর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৫ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২০
থানা হেফাজতে মৃত্যু: এসআই জা‌হি‌দের জা‌মিন নামঞ্জুর

ঢাকা: থানা হেফাজতে জনি নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে হওয়া মামলায় পল্লবী থানার তৎকাল‌ীন উপ-প‌রিদর্শক (এসআই) জা‌হিদুর রহমা‌নের জা‌মিন আবেদন নামঞ্জুর ক‌রে‌ছেন আদালত।

বৃহস্প‌তিবার (১১ জুন) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কা‌য়ে‌শের ভার্চ্যুয়াল আদালত এই আদেশ দেন।

আসা‌মিপ‌ক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ এই তথ‌্য জানান।

তি‌নি ব‌লেন, জা‌হিদ সাত বছর কারাগা‌রে আছেন। তার বাবা খুবই অসুস্থ। ক‌রোনার এই সঙ্কটকা‌লে তাই মান‌বিক বি‌বেচনায় জামিন আবেদন ক‌রে‌ছিলাম। ত‌বে আদালত ব‌লে‌ছেন, বিচা‌রের শেষ পর্যা‌য়ে এসে এখন আর জা‌মিনের বিষয়‌টি বি‌বেচনার সু‌যোগ নেই।  

একই আদাল‌তে মামলা‌টি সাক্ষ‌্যগ্রহণ শে‌ষে এখন যু‌ক্তিতর্ক পর্যা‌য়ে র‌য়ে‌ছে। যু‌ক্তিতর্ক শে‌ষে মামলার রায় ঘোষণার দিন নি‌র্ধারণ করা হ‌বে।

গত ৯ ফেব্রুয়া‌রি এই মামলায় আসা‌মিরা আত্মপক্ষ সমর্থন ক‌রে বক্তব‌্য রা‌খেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ যু‌ক্তিতর্ক উপস্থাপন ক‌রে। রাষ্ট্রপ‌ক্ষের যু‌ক্তিতর্ক শেষে বেশ ক‌য়েক‌দিন আসা‌মিপ‌ক্ষের যু‌ক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়। ত‌বে এই যু‌ক্তিতর্ক অসমাপ্ত অবস্থায়ই ক‌রোনা সংক্রম‌ণের কার‌ণে সাধারণ ছু‌টি শুরু হয়।  

এই মামলার আসামিরা হলেন- পল্লবী থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান জাহিদ, এএসআই রাশেদুল, এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টু এবং পুলিশের সোর্স সুমন ও রাশেদ। আসামিদের মধ্যে এসআই জাহিদ ও সুমন কারাগারে থাকলেও বাকিরা জামিনে আছেন।

মামলার আর্জি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর ১১ নম্বর সেক্টরে স্থানীয় একটি বিয়ের অনুষ্ঠান চলাকালে পুলিশের সোর্স সুমন মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। ‌এ সময় জনি ও তার ভাই সুমনকে সেখান থেকে চলে যেতে বললে সে পুলিশকে ফোন দেয়। পুলিশ এসে জনিকে আটক করে নেয়। এ সময় স্থানীয়রা পুলিশকে ধাওয়া দিলে তারা গুলি ছুঁড়ে।

আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের এক পর্যায়ে জনির অবস্থার অবনতি হয়। এসময় তাকে প্রথমে ন্যাশনাল হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জনিকে মৃত ঘোষণা করে।

জনির মৃত্যুর ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত জনির ছোট ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।

২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ হোসেন তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওসি জিয়াউর রহমানসহ পাঁচজনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান মিন্টুকে প্রতিবেদনে নতুনভাবে অভিযুক্ত করা হয়।

২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। প্রায় চার বছরে ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে মামলাটির সাক্ষ্য শেষ হলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২০
কে‌আই/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।