ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘চিকিৎসা বর্জ্য ব্যস্থাপনায় বিধি বাস্তবায়নে কী পদক্ষেপ’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২০
‘চিকিৎসা বর্জ্য ব্যস্থাপনায় বিধি বাস্তবায়নে কী পদক্ষেপ’ হাইকোর্ট | ফাইল ছবি

ঢাকা: চিকিৎসা বর্জ্য ব্যস্থাপনায় বিধিমালা বাস্তবায়নে সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। ১০ আগস্টের মধ্যে তা আদালতকে লিখিত আকারে জানাতে হবে।

জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার (১৯ জুলাই) বিচারপতি জে বি এম হাসানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ১২ অক্টোবর দিন ঠিক করেছেন আদালত।

ভার্চ্যুয়াল আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওসার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবাশীস ভট্টাচার্য্য ও সহকারী  অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম।

আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম।

এর আগে ১২ জুলাই পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. আনিকা আলী ও মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক, বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের ই-মেইলের মাধ্যমে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।

নোটিশ পাঠানোর পর সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী জানান, চিকিৎসা বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা ২০০৮-এর বিধি-বিধান পূর্ণাঙ্গরূপে বাস্তবায়নের জন্য বিবাদীদের অনুরোধ করা হয়েছে। উক্ত বিধিমালার বিধি ৩ অনুযায়ী দেশের প্রত্যেক বিভাগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালকের সভাপতিত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের কথা বলা হয়েছে। উক্ত কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দিতে পারবে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিধি অনুযায়ী চিকিৎসা বর্জ্য এমনভাবে ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাত করবে যাতে মানব স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব না পড়ে এবং এ বিধির তফসিল ৬ অনুযায়ী চিকিৎসা বর্জ্য পরিশোধনের যেই মানদণ্ড দেওয়া হয়েছে তা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।

এছাড়া চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র ন্যূনতম তিন বছর সংরক্ষণ করতে হবে। বিধিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে চিকিৎসা বর্জ্য মজুদ, পরিবহন, পরিশোধন ও বিনষ্ট করার আগেই তফসিল অনুযায়ী উৎপাদনের স্থানে পৃথক করে রাখতে হবে। বিধি ৪ অনুযায়ী ঢাকনাযুক্ত করতে হবে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, অশোধিত কোনো চিকিৎসা বর্জ্য ৪৮ ঘণ্টার বেশি মজুদ করে রাখা যাবে না। কেবলমাত্র সুনির্দিষ্ট ও সুরক্ষিত এলাকাসমূহে এ চিকিৎসা বর্জ্য মজুদ করা যাবে।

আইনজীবীরা আরও জানান, আমরা আশঙ্কা ও গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি কর্তৃপক্ষ বিধিমালা অনুযায়ী তেমন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফলশ্রুতিতে অন্য বর্জ্যের মতো চিকিৎসা বর্জ্যের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও অস্বাস্থ্যকর ও পরিবেশ দূষণ ঘটছে। বিশেষ করে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে এ আশঙ্কা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। সরকারিভাবে লাখ লাখ পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে।

এছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে কোটি কোটি মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহৃত হচ্ছে। একইসঙ্গে করোনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিপুল পরিমাণ অন্য মেডিকেল সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব চিকিৎসা বর্জ্যের যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে না পারলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। কাজেই প্রণীত বিধিমালা অনুযায়ী চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা না গেলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়বে। এ বিষয়গুলো বিবেচনা করে জনস্বার্থে উক্ত নোটিশটি পাঠানো হয়েছে।  

এরপর এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২০
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।