ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘অন্যায় করেছি, সবার টাকা ফেরত দেবো’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২০
‘অন্যায় করেছি, সবার টাকা ফেরত দেবো’ সাহেদ করিম

ঢাকা: অন্যায় স্বীকার করে বিভিন্ন জনের দাবি করা টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলেছেন রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম।

রোববার (২৬ জুলাই) তার বিরুদ্ধে চার মামলার রিমান্ড আবেদনের শুনানির সময় এ কথা বলেন সাহেদ।

রিজেন্ট হাসপাতালের করোনা পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতারণার মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড শেষে সাহেদ ও রিজেন্ট গ্রুপের এমডি মাসুদ পারভেজকে আদালতে হাজির করা হয়। দুইঘণ্টা সময় আদালতের হাজতখানায় অবস্থানের পর বেলা ১২টার দিকে সাহেদকে আদালতে তোলা হয়।

তার বিরুদ্ধে এদিন মোট সাতটি মামলায় শুনানি হয়। শুরুতেই রিজেন্টের মামলায় রিমান্ড শেষে তাকে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে রাখার আবেদন করে র‌্যাব। আবেদন মঞ্জুর করে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর তাকে সাতক্ষীরায় গ্রেফতারের সময় অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় জেলার দেবহাটা থানায় অস্ত্র আইনের মামলায় এবং জাল টাকা উদ্ধারের ঘটনায় র‌্যাবের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

সবশেষ তার বিরুদ্ধে উত্তরা পূর্ব ও পশ্চিম থানায় বিভিন্ন জনের করা আর্থিক প্রতারণার চার মামলায় ১০ দিন করে মোট ৪০ দিনের রিমান্ড শুনানি হয়। বিচারক প্রত্যেক মামলায় ৭ দিন করে ২৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়া তার সহযোগী মাসুদ পারভেজকে তিন মামলায় ৩০ দিনের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

রিমান্ড শুনানির একপর্যায়ে আদালতের অনুমতি নিয়ে সাহেদ নিজেই কথা বলেন। আদালতে সাহেদ বলেন, ‘আমি তো অন্যায় করেছি। সব অপরাধের সঙ্গে আমি জড়িত। দেশের অবস্থা স্বাভাবিক হলে যারা আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে, তাদের সব টাকা-পয়সা পরিশোধ করে দেবো। ’

ঈদের পর রিমান্ড আবেদনের বিষয়ে শুনানির প্রার্থনা জানিয়ে সাহেদ বলেন, ‘গত ১২ থেকে ১৩ দিন ধরে আমি খুব চাপের মধ্যে আছি। আমি আর পারছি না। আমি অসুস্থ। রিমান্ড শুনানিটা ঈদের পর হলে ভালো হয়।

তার বক্তব্যের বিরোধিতা করে ঢাকা মহানগর আদালতের প্রধান কৌশলী আব্দুল্লাহ আবুসহ রাষ্ট্রপক্ষে কয়েকজন আইনজীবী বক্তব্য রাখেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বিনামূল্যে তার করোনা টেস্ট করার কথা। অথচ করোনা পরীক্ষার কথা বলে আসামি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। তিনি একজন মহাপ্রতারক। অসুস্থ না হয়েও গত ১৬ জুলাই আদালতে তিনি নিজেকে করোনা রোগী বলে দাবি করেন। আসামি আষাঢ়ের গল্প বলছেন। পুলিশ তার যে রিমান্ড চেয়েছে, আমরা তা মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি। ’

এ সময় নাজমুল হোসেনসহ আসামিপক্ষের কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন।

গত ৬ জুলাই রাতে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত উত্তরায় রিজেন্ট হাসপাতালের প্রধান শাখায় অভিযান পরিচালনা করে। পরদিন সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করে র‌্যাব। গত ৭ জুলাই সন্ধ্যার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে হাসপাতালের শাখা দু’টির (উত্তরা ও মিরপুর) কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশের কথা বলা হয়। ওইদিন বিকেলে উত্তরায় রিজেন্টের প্রধান কার্যালয় সিলগালা করে দেয় র‌্যাব।

শুরুতে সাহেদসহ ৯ জন আসামিকে পলাতক দেখিয়ে এজাহারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরে সাহেদের আরেক সহযোগী তারেক শিবলী রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। সবশেষ গত ১৫ জুলাই ভোরে সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় রিজেন্টের চেয়ারম্যান সাহেদকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২০
কেআই/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।