ঢাকা: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি। রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ার কথা ছিল।
তবে তিনি সাক্ষ্য দেওয়ার অবস্থায় নেই জানিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোর আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ৫ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন বিচারক।
গত ২ সেপ্টেম্বর এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয়। সেদিন এ মামলায় গ্রেফতার ২২ আসামির মধ্যে ১৩ জনের পক্ষে অব্যাহতির (ডিসচার্জ) আবেদনের ওপর শুনানি হয়। গত ৯ সেপ্টেম্বর বাকি ৯ আসামির আইনজীবী অব্যাহতির আবেদনের ওপর শুনানি করেন।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা অব্যাহতির আবেদনের বিরোধিতা করে প্রত্যেক আসামির বিরুদ্ধে হত্যার দায়ে অভিযোগ গঠনের আর্জি জানান। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচার শুরুর বিষয়ে আদেশের জন্য ১৫ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করা হয়।
পরে ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে চার্জশিটভুক্ত ২৫ আসামির বিরুদ্ধেই অভিযোগ গঠন হয়।
এদিন পলাতক তিন আসামি মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদের পক্ষে আ. রহিম মোল্লা, বদিউর আলম ভুঁইয়া ও শাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেন আদালত।
এছাড়া মামলায় অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে কারাগারে থাকা ২২ জনকে আদালতে হাজির করা হয়৷ তারা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিওন, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, শাখা ছাত্রলীগ সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির ও ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত এবং এস এম মাহমুদ সেতু এবং মোর্শেদ অমত্য ইসলাম।
এ মামলায় আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা হলেন- ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, অনিক সরকার, মুজাহিদুর রহমান, মেহেদি হাসান রবিন, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মনিরুজ্জামান মনির ও এএসএম নাজমুস সাদাত।
গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মীর হাতে নির্দয় পিটুনির শিকার হয়ে মারা যান বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ।
এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন। পরে নির্যাতনের সময়ের ভিডিও ফুটেজ ও পুলিশি তদন্তে এ হত্যাকাণ্ডে আরও ৬ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাদের এ মামলায় আসামি করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০
কেআই/এসআই