ঢাকা: অস্ত্র মামলায় নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা নুর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীর আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড চায় রাষ্ট্রপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগরের ১ নম্বর স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে যুক্তিতর্কে এ আর্জি জানানো হয়।
এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু এবং অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল।
রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেছেন। আসামিপক্ষে সুমনের পক্ষে আইনজীবী এএফএম গোলাম ফাত্তাহ যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। এরপর পাপিয়ার পক্ষে সাখাওয়াত উল্লাহ ভূঁইয়া যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। তবে এদিন তা শেষ না হওয়ায় অসমাপ্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন। যুক্তিতর্ক শেষে মামলায় রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হবে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর আসামিরা ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য রাখেন। ওইদিন তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান। পরে আদালত এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ২৪ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।
গত ২৪ আগস্ট একই আদালত এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৩১ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়। গত ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের উপ-পরিদর্শক আরিফুজ্জামানের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্য শেষ হয়।
গত ২৯ জুন পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে এ মামলায় সিএমএস আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের উপ-পরিদর্শক আরিফুজ্জামান। এরপর মামলাটি বদলি হয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসে।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি র্যাব-২ এর একটি দল পাপিয়া পিউকে আটক করে। এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে নয়াদিল্লিতে যাওয়ার সময় বহির্গমন গেট থেকে তাদের আটক করা হয়।
তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, বাংলাদেশি দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার ও সাতটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
র্যাব জানায়, যুবলীগ নেত্রী পাপিয়া পিউ নামেই তিনি বেশি পরিচিত। এ নেত্রীর প্রকাশ্য আয়ের উৎস গাড়ি বিক্রি ও সার্ভিসিংয়ের ব্যবসা। তবে এর আড়ালে তিনি মূলত অবৈধ অস্ত্র ও মাদকের ব্যবসা করতেন। কোনো কাজ বাগিয়ে নিতে পাঁচতারকা হোটেলে সুন্দরী তরুণীদের পাঠিয়ে মনোরঞ্জন করতেন সংশ্নিষ্ট ব্যক্তিদের।
পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় জাল টাকা উদ্ধারের ঘটনায় এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি শেরে বাংলানগর থানায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের দু'টি মামলা হয়। তিনটি মামলায় এ দুজনকে কয়েক দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০
কেআই/ওএইচ/