সিলেট: সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় করা মামলার ছয় নম্বর আসামি মাহফুজুর রহমান মাছুমের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বেলা পৌনে ১টার দিকে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতে আসামি মাহফুজুকে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরাণ (র.) থানার পরিদর্শক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য্য।
সিলেট নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামি মাহফুজুকে আদালতে হাজির করা হয়। এ নিয়ে মামলায় গ্রেফতার হওয়া আট আসামির মধ্যে সাতজনের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করলেন আদালত।
এর আগে মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মামলার তিন নম্বর আসামি মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), আসামি রাজন ও তার সহযোগী আইনুলের এবং গত সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান ও চার নম্বর আসামি অর্জুন লস্কর ও পাঁচ নম্বর আসামি রবিউল ইসলামেরও পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন একই আদালতের বিচারক।
আদালত থেকে বেরিয়ে আইনজীবীরা বাংলানিউজকে বলেন, ধর্ষণকারীরা এমসি কলেজের ১২৮ বছরের ইতিহাস কলঙ্কিত করেছে। রিমান্ড মঞ্জুরকালে জেলা বারের শতাধিক আইনজীবী বাদী পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়াননি।
সিলেট নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জ্যোতির্ময় সরকার বাংলানিউজকে বলেন, মামলার আটজন আসামি সাতজনকে রিমান্ডে আনা হয়েছে। বিকেলে আরেক আসামি তারেকুল ইসলাম তারেককে আদালতে হাজির করা হবে।
শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক নারীকে ছাত্রলীগের ছয়জন নেতাকর্মী গণধর্ষণ করেন। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই দম্পতিকে ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে ধর্ষণের শিকার নারীকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দক্ষিণ সুরমার নবদম্পতি শুক্রবার বিকেলে প্রাইভেটকারে করে এমসি কলেজে বেড়াতে যান। এমসি কলেজ ছাত্রলীগের ছয়জন নেতাকর্মী স্বামী-স্ত্রীকে ধরে ছাত্রাবাসে নিয়ে প্রথমে মারধর করেন। পরে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করেন। ছাত্রলীগ নেতাদের প্রত্যেকেই ছাত্রাবাসে থাকতেন। তারা টিলাগড় কেন্দ্রীক আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট রণজিত সরকার গ্রুপের অনুসারী।
এ ঘটনায় শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে ছয়জনের নামোল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও দুই/তিনজনকে অভিযুক্ত করে নগরের শাহপরাণ থানায় মামলা দায়ের করেন ওই নারীর স্বামী। এছাড়া ঘটনার পর অভিযানে নেমে সাইফুরের কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পৃথক আরেকটি
মামলা দায়ের করেন শাহপরাণ (র.) থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিল্টন সরকার। ছাত্রলীগ ক্যাডার সাইফুর রহমানকে আসামি করে মামলা করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০
এনইউ/এএটি