ঢাকা: অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার মো. আব্দুস সাত্তার জালিয়াতি করে জামিন নেওয়ায় ঝিনাইদহ কারাগারের দুই কারারক্ষীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
যাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে বলা হয়েছে তারা হলেন- অস্ত্র মামলার আসামি আলমডাঙ্গা উপজেলার কায়েতপাড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তার, ঝিনাইদহ কারাগারের দুই রক্ষী কনস্টেবল বিশ্বজিৎ বাবু ও কনস্টেবল খায়রুল আলম, তদবিরকারক চাঁন্দ আলী বিশ্বাস (পিতা মৃত বজলু বিশ্বাস, গ্রাম উত্তরপাড়া, ঝিনাইদহ) এবং এফিডেভিটকারী আসামি সাত্তারের পিতা নিজামুদ্দিন।
২০১৮ সালে সাত্তারের কাছ থেকে পুলিশ এক রাউন্ড গুলিসহ ওয়ান শুটার গান উদ্ধার করে। এই ঘটনায় করা মামলায় বিচারিক আদালত তাকে দুটি ধারায় ১৭ বছরের সাজা দেন।
কিন্তু নিম্ন আদালতের ওই রায় বদল করে সেখানে অস্ত্রের পরিবর্তে ‘চাইনিজ কুড়াল’ উদ্ধারের বিষয়টি উল্লেখ করে হাইকোর্টে আপিল করে জামিন চান সাত্তার। হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে তাকে এক বছরের জামিন দেন।
কিন্তু সন্দেহ হওয়ায় তার আইনজীবীই বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন। ২১ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিনাদেশ প্রত্যাহার করে নেন। এছাড়া এই বিষয়ে আদেশের জন্য বুধবার দিন ঠিক করেন।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী শেখ আতিয়ার রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
আইনজীবী শেখ আতিয়ার রহমানকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, জালিয়াত চক্র আপনাকে চিনলো কীভাবে? জালিয়াত চক্র আপনার উপর ভর করেছে কেন? আরও দুটি জামিন জালিয়াতির মামলায় আপনি ও আপনার ক্লার্ক সোহেল রানার নাম এসেছে। মামলা পেলেন আর দাঁড়িয়ে গেলেন? একজন সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে কি আপনার কোনো দায়িত্ব নেই?
জবাবে আইনজীবী বলেন, জালিয়াতির বিষয়টি জানতে পেরে আসামির এলাকায় আমার ছেলে ও দুই সহকারী পাঠিয়ে তথ্য যাচাই করে তা নিয়ে আদালতে দাখিল করেছি। শেষ বয়সে এসে এমন পরিস্থিতির জন্য আমি লজ্জিত।
আইনজীবীরা জানান, ২০১৮ সালের ২ মে রাতে অস্ত্র ও গুলি নিয়ে আব্দুস সাত্তার আলমডাঙ্গা রেলবাজারে অবস্থান করছিল। এসময় পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে।
আলমডাঙ্গা থানার এসআই সুফল কুমার বিশ্বাস বাদী হয়ে পর দিন আব্দুস সাত্তারের নামে অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ৬ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম আব্দুস সাত্তারকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এই মামলায় ওই বছরের ৩১ অক্টোবর সাত্তারকে অস্ত্র আইনের দুই ধারায় ১৭ বছরের সাজা দেন আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০
ইএস/এইচএডি/