যশোর: যশোরে বাসের মধ্যে নারী ধর্ষণ মামলার সাত আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে যশোর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালতে তাদের সোপর্দ করা হয়।
মামলার প্রধান আসামি মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের ওহিদুলের ছেলে ও এম কে পরিবহনের হেলপার। অভিযুক্ত বাকি ছয় আসামি হলেন- শহরের সিটি কলেজপাড়ার রনজিৎ বিশ্বাসের ছেলে কৃষ্ণ, একই এলাকার সমর সিংহের ছেলে সুবাস সিংহ, শহরের বারান্দিপাড়ার জাবেদুল ইসলাম জাবেদের ছেলে রকিবুল ইসলাম রকিব, শহরের বেজপাড়ার গোলাম মাওলার ছেলে মঈনুল ইসলাম মইন ও শহরের পূর্ববারান্দি মোল্লাপাড়ার শফিকুল ইসলাম বাবুর ছেলে শাহিন আহমেদ জনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেখ আবু হেনা মিলন বলেন, ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি মনিরুলসহ সাত আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মনিরুল ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
গত শুক্রবার (৯ অক্টোবর) রাতে কোতোয়ালি থানায় সাতজনের নামে মামলা করা হয়েছে। মামলার বাদী ভিকটিম নিজেই। গত বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) দিনগত রাতে যশোর শহরের মুড়লী বকচর কোল্ডস্টোরের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা এম কে পরিবহনের একটি বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ওই নারীর বাড়ি যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায়। তিনি রাজশাহীর একটি ক্লিনিকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে চাকরি করেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বাদী রাজশাহীর একটি ক্লিনিকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী। ছুটিতে বাড়ি আসার সময় সাধারণত এম কে পরিবহনে আসেন। সেই সুবাদে এম কে পরিবহনের হেলপার মনিরুলের সঙ্গে পরিচয় হয়। মাঝে মধ্যে তাদের মোবাইল ফোনে কথাও হয়।
গত ৮ অক্টোবর বাড়ির উদ্দেশে রাজশাহী থেকে এম কে পরিবহনে যশোরের উদ্দেশে রওনা হন। গাড়িতে আসার সময় মোবাইলে মনিরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকে মণিহার মোড়ে নামতে বলেন। তার কথা মতো রাত আনুমানিক ১১টার দিকে মণিহার মোড়ে নামেন। সেখানে একটি হোটেলে একসঙ্গে তারা খাওয়া-দাওয়া করেন। খাওয়া-দাওয়া শেষে মনিরুলকে বলেন আমি তো এতো রাতে বাড়ি যেতে পারবো না আমাকে বাড়ি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করো। মনিরুল তার নিজের গাড়ি এম কে পরিবহনের মাধ্যমে নিউমার্কেটে নিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। আমি সরল বিশ্বাসে রিকশায় করে মনিরুলের সঙ্গে বকচর কোল্ডস্টোরের পাশে রাখা এম কে পরিবহনের ভেতরে যাই।
আনুমানিক রাত ১টার দিকে জোরপূর্বক মনিরুল আমাকে ধর্ষণ করেন। পরবর্তীতে রাত দেড়টার দিকে আসামি রাকিবুল, মঈনুল, মুকুল, জনি, সুভাষ, কৃষ্ণ এসে গাড়ির দরজা ধাক্কাধাক্কি ও গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে মনিরুল গাড়ির দরজা খুলে দিলে আমি বের হতে চাইলে আসামিরা আমাকে আটকে রাখেন। এরপর আসামি রাকিবুল, মঈনুল ও মুকুল বাসের মধ্যে উঠে আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। আমি চিৎকার চেচামেচি করলে অন্য আসামিরা সবাই মিলে আমাকে ও মনিরুলকে চড়-কিল-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারতে থাকেন। তারা আমার ব্যাগে থাকা পাঁচ হাজার টাকা চুরি করে নেয়। এসময় আশপাশের লোকজনে এগিয়ে আসে। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২০
ইউজি/আরবি/