বরিশাল: বরিশালে ১১ বছরের শিশু সন্তানকে হত্যার দায়ে মা কনা বেগম ও তার দুই পরকীয়া প্রেমিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১২ অক্টোবর) বরিশালের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম শহীদ আহম্মেদ এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নিহত শিশু রনির মা কনা বেগম ও তার দুই পরকীয়া প্রেমিক রুহুল আমিন নলি ও শাহীন নলি। রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কনা ও রুহুল আমিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা সবাই বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজীর হাট থানাধীন পশ্চিম রতনপুর এলাকার বাসিন্দা। এর মধ্যে দণ্ডপ্রাপ্ত শাহীন কনা বেগমের আপন চাচাতো ভাই ও রুহুল আমিন শাহীনের বন্ধু এবং কাজীর হাট একতা ডিগ্রি কলেজের ছাত্র ছিলেন।
এদিকে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজীর চর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল নিহত রনি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, কনার স্বামী ও মামলার বাদী লকিতুল্লাহ দুয়ারী চট্টগ্রামের চাকতাই এলাকায় দিন মজুরের কাজ করতেন। তার অবর্তমানে কনার সঙ্গে শাহীনের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর সূত্র ধরে রুহুল আমিনের সঙ্গেও অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে কনার। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শাহীন ও রুহুল আমিন পশ্চিম রতনপুর এলাকায় কনার বাড়িতে যান এবং দৈহিক মিলনে লিপ্ত হন। এ সময় কনার ছেলে রনি তা দেখে ফেলে এবং তার বাবার কাছে বলে দেওয়ার কথা বললে তারা তিন জন মিলে রনিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে সাপের কামড়ে রনির মৃত্যু হয়েছে বলে কনা প্রচার করেন। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানের সন্দেহ হলে তিনি থানা পুলিশকে খবর দেন।
এ ঘটনায় নিহত রনির বাবা লতিকুল্লাহ দুয়ারী পরের দিন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ রুহুল আমীনকে গ্রেফতার করা হলে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্ত শেষে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম মৃধা তিন জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট লস্কর নুরুল হক এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২০
এমএস/আরআইএস