বরগুনা: বরগুনার আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত (রিফাত শরীফ) হত্যা মামলায় অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে।
সোমবার (১২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বরগুনার শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমানের আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের অধিকতর যুক্তিতর্ক খণ্ডনের জন্য আগামী বুধবার (১৪ অক্টোবর) মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এর আগে গত ০৫ ও ০৬ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষ ১৪ আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আট আসামি আদালতে উপস্থিত হন। এরপর বরগুনা জেলা কারাগার থেকে আদালতে আনা হয় অন্য ছয় আসামিকে। সকাল ১০টার দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু করেন বরগুনা শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
অপ্রাপ্তবয়স্ক ১২ নম্বর আসামি প্রিন্স মোল্লার আইনজীবী মোস্তফা কাদের বাংলানিউজকে বলেন, আদালতে আমরা যে সব প্রমাণ উপস্থাপন করেছি, এতে আমার মক্কেল আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হবে। এ মামলার রায়ে ন্যায্য বিচার পাবো বলে আশা রাখছি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বাংলানিউজকে বলেন, ১৪ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের আইনগত ব্যাখার পরে আদালত রায়ের তারিখ ঘোষণা করবেন। খুব দ্রুত সময়ে এ মামলার রায় হবে বলে প্রত্যাশা করি।
অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামিরা হলেন- রাশিদুল হাসান রিশান ওরফে রিশান ফরাজী, রাকিবুল হাসান রিফাত হাওলাদার, আবু আবদুল্লাহ ওরফে রায়হান, ওলিউল্লাহ ওরফে অলি, জয় চন্দ্র সরকার ওরফে চন্দন, নাঈম, তানভীর হোসেন, নাজমুল হাসান, রাকিবুল হাসান নিয়ামত, সাইয়েদ মারুফ বিল্লাহ ওরফে মহিবুল্লাহ, মারুফ মল্লিক, প্রিন্স মোল্লা, রাতুল শিকদার জয় ও আরিয়ান হোসেন শ্রাবণ।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে মিন্নিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। পাশাপাশি তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। অন্য চারজনকে খালাস দেওয়া হয়। এ রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন বন্ড ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত করেন। এরপর বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ছাড়েন তারা। গুরুতর আহত রিফাত বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই দিনই মারা যান।
ওই বছরের ০১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয় পুলিশ। একই সঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
চলতি বছরের ০১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ০৮ জানুয়ারি একই মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত। এ মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মুসা এখনো পলাতক রয়েছেন।
>>>রিফাত হত্যা মামলায় মিন্নিসহ ৬ জনের ফাঁসির রায়
>>>রায়ে সন্তুষ্ট রিফাতের বাবা
>>>ভেতরে চলছে রিফাত হত্যার রায়ের কার্যক্রম, বাইরে ছেলে হত্যার বিচার দাবি আরেক মায়ের
>>>আদালতে আনা হলো রিফাত হত্যার আসামিদের
>>>রিফাত হত্যার রায় শোনার জন্য অপেক্ষায় স্বজন-স্থানীয়রা
>>>আদালতে এসেছেন বিচারক মো. আছাদুজ্জামান
>>>রিফাত হত্যা: কারাগারে মিন্নিসহ সব আসামি
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২০
এসআরএস