ঢাকা: পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে রায়ে চার দফা পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আদালত। বেসরকারি নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান পায়েল হত্যা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে এসব পর্যবেক্ষণ দেন আদালত।
পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, গাড়ি ছাড়ার আগে চালক, হেলপার ও সুপার ভাইজরসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ডোপ টেস্ট করতে হবে। মহাসড়কে প্রতি তিন কিলোমিটার পরপর পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা,
মহাসড়কে সিসিটিভি বসিয়ে বাস চলাচল মনিটরিং ও যাত্রীদের সঙ্গে বাস সংশ্লিষ্টদের আচরণ মনিটরিং করতে হবে, যেন তারা যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে না পারে।
রোববার (১ নভেম্বর) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় দেন। রায়ে মামলার তিন আসামিকেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- পায়েলকে যে বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয় হানিফ পরিবহনের সেই বাসের সুপারভাইজর জনি, চালক জামাল হোসেন ও তার সহকারী ফয়সাল হোসেন।
রায়ে বিচারক বলেন, অদক্ষ গাড়িচালক, বেপরোয়াভাবে বাস চালানো, গাড়ি চলাচলের অযোগ্য রাস্তা ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি- ইত্যাদি কারণেই এ দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে। সড়কে প্রতিদিন এত মানুষের মৃত্যু নিছক কী দুর্ঘটনা নাকি হত্যা, তা নিয়ে সর্বসাধারণের মনে প্রশ্ন উঠেছে।
তিনি বলেন, কিছু চালক রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পথচারীদেরও পিষে দিতে দ্বিধান্বিত হচ্ছে না। আর কত প্রাণ গেলে আমরা সজাগ হবো?
বিচারক পায়েল হত্যা সম্পর্ক বলেন, সাইদুর রহমান পায়েল ঢাকার বারিধারা নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিবিএতে অধ্যায়নরত ছিলেন। একজন প্রতিভাবান মেধাবী ছাত্র। উচ্চশিক্ষা নিয়ে সে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে দেশ ও জাতির সেবায় আত্মনিয়োগের জন্য যখন নিজেকে তৈরি করছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে বাস ড্রাইভার, সুপারভাইজর ও হেলপারের নির্মমতার শিকার হয়ে তাকে অকালে প্রাণ দিতে হলো।
২০১৮ সালের ২১ জুলাই দিনগত রাতে দুই বন্ধু আকিবুর রহমান আদর ও মহিউদ্দিন শান্তর সঙ্গে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পথে রওয়ানা হওয়ার পর নিখোঁজ হন পায়েল। দু’দিন পর ২৩ জুলাই মুন্সীগঞ্জের ভাটেরচর সেতুর নিচের খাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে গজারিয়া থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই পায়েলের মামা গোলাম সরোয়ার্দী বিপ্লব বাদী হয়ে এই তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০২০
কেআই/এএ