ঢাকা: রাজধানীর নর্থ রোডের (ভূতের গলি) ফ্ল্যাট থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের দুর্নীতির মামলায় সিলেটের সাময়িক বরখাস্ত কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন) পার্থ গোপাল বণিকের বিচার শুরু হয়েছে।
বুধবার (০৪ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
গত ৩১ আগস্ট এই মামলাটি বিচারের জন্য বিশেষ জজ আদালত-১০ এ বদলি হয়ে আসে।
গত ২৪ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন ডিআইজি প্রিজন পার্থের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে মোট ১৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, পার্থ গোপালের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ৮০ লাখ টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। অর্থাৎ তিনি সরকারি দায়িত্ব পালনকালে ৮০ লাখ টাকা বিভিন্ন অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপার্জন করে অর্থপাচারের উদ্দেশ্যে নিজ বাসায় লুকিয়ে রেখেছেন মর্মে প্রমাণিত হয়।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, ২০১৪ সালে তিনি ৩১,২৫০ টাকা বেতন স্কেলে কারা উপ-মহাপরিদর্শক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তার এই বেতন স্কেলের সঙ্গে এতো টাকা অর্থ উপার্জন অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি তার কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তা উত্তোলন করেননি বা তিনি কখনও এই অর্থ আয়কর বিবরণীতেও প্রদর্শন করেননি। যা দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
গত বছরের ২৮ জুলাই সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দুদকের সেগুনবাগিচার প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের পরিচালক মুহাম্মদ ইউছুফের নেতৃত্বে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পার্থ গোপাল বণিককে। ঘুষ ও দুর্নীতির কয়েক লাখ নগদ টাকা তার বাসায় রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে এদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পার্থ গোপাল বণিকের বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৮০ লাখ টাকা জব্দ করা হয় এবং তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হয়।
পরে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের নেতা মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
সিলেটে দায়িত্ব পালনের আগে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে দায়িত্ব পালন করেন পার্থ গোপাল বণিক। চট্টগ্রাম কারাগারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তাকে এবং চট্টগ্রামের সাবেক সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। তারপরই অভিযানে যায় কমিশন।
পরে ৩০ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে পার্থ গোপাল বণিককে গ্রেফতারের দিন থেকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০২০
কেআই/এমজেএফ