ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

৬ বছর পর ফিরলেন ‘নিহত’ যুবক, মামলা থেকে ৬ জনের অব্যাহতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২০
৬ বছর পর ফিরলেন ‘নিহত’ যুবক, মামলা থেকে ৬ জনের অব্যাহতি ছবি: প্রতীকী

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানায় একটি অপহরণের ছয় বছর ও মামলার চার বছর পর যুবক নিজেই আদালতে হাজির হওয়ার ঘটনায় ছয় বিবাদীকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আদালত সিআইডি ও পুলিশের তিনজনের মধ্যে দু’জনকে পরের শুনানিতে নথিপত্রসহ উপস্থিত হতে বলেছেন।

 

বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌসের আদালত ও আদেশ দেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ এমদাদ হোসেন সোহেল বলেন, এর আগে গত ১ নভেম্বর আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডি ও পুলিশের তিনজনকে স্ব-শরীরে তলব করেন আদালত। ৫ নভেম্বর ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ও এসআই জিয়াউদ্দিন উজ্জ্বল আদালতে হাজির হন। পরে বিচারক সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদকে বাদ দিয়ে অপর দু’জনকে পরের শুনানিতে নথিসহ হাজির হতে বলেছেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ এমদাদ হোসেন সোহেল আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতি চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ নভেম্বর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌসের আদালত সিআইডি ও পুলিশের তিনজনকে স্ব-শরীরে উপস্থিত থেকে জবার দেওয়ার জন্য পরবর্তী শুনানি ৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন। এছাড়া বিবাদী তাসলিমা, রকমত, রফিক, সাগর, সাত্তার ও সোহেলকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এর আগে মামলার পর পুলিশ অভিযুক্ত ছয়জনকেই গ্রেফতার করে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। অভিযোগ রয়েছে রিমান্ডে থাকা সময়ে গ্রেফতারকৃত ছয়জনকে মারধর করা হয়। ছয়জনকেই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে পাঠানো হয়। কিন্তু তাদের কেউ আদালতে জবানবন্দি দেয়নি।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১০ মে মামুন নামে এক যুবক অপহরণ হয়েছে অভিযোগ এনে দুই বছর পর ২০১৬ সালের ৯ মে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন তার বাবা আবুল কালাম। ওই মামলায় ছয়জনকে বিবাদী করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামুনকে অপহরণের পর গুমের অভিযোগ করা হয়েছিল।

ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মিজানুর রহমান। তিনি আদালতে আসামিদের রিমান্ড চাওয়ার সময়ে আর্জিতে উল্লেখ করেন, ‘খালাতো বোন তাসলিমা ২০১৪ সালের ১০ মে মামুনকে ডেকে নিয়ে কৌশলে অপহরণ করে বিষাক্ত শরবত পান করিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে মরদেহ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দিয়ে গুম করেছে। ’

পরবর্তীতে মামলাটি পুলিশের অপরাধ বিভাগ সিআইডিকে ন্যস্ত করা হয়। সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। এতে মামলার এজাহারভুক্ত ছয়জনকেই অভিযুক্ত করেন। সাক্ষী করা হয়েছিল ২১ জনকে।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৪ সালের ১০ মে খালাতো বোন তাসলিমাকে দিয়ে কৌশলে মামুনকে বাড়ি থেকে ডেকে আনা হয়। পরবর্তীতে মামনুকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় তাসলিমা। কিন্তু বিয়েতে রাজি না হওয়াতে বিবাদী ছয়জন মিলে মামুনকে কোমল পানির সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। তবে কোথায় কীভাবে কি অবস্থায় রাখা হয়েছে সেটা জানা যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২০
আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।