ঢাকা: পঞ্চগড় জেলা সদরের তালমা নদী দখল/ভরাট ও নির্মাণকাজ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) বিচারপতি মো.মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে ৩ নভেম্বর ‘পঞ্চগড়ে প্রকাশ্যে নদী দখল’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে ১০ নভেম্বর এ রিট করা হয়।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
পরে মনজিল মোরসেদ জানান, পঞ্চগড় জেলা সদরের উপকণ্ঠে তালমা নদী দখল/ভরাট ও নির্মাণকাজ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক ৬ মাসের মধ্যে সি.এস/আর.এস এর নকশা অনুসারে দখলদারদের সুনির্দিষ্ট তালিকা করে রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করবেন। একইসঙ্গে রুলও জারি করেছেন। রুলে তালমা নদী রক্ষায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং সি.এস /আর.এস অনুযায়ী নদী রক্ষায় কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
চার সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট), পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(ভূমি), পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এসিল্যান্ড এবং ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পঞ্চগড় জেলা শহরের উপকণ্ঠে প্রবহমান তালমা নদী দখল চলছে। কয়েক দিন ধরে শত শত ট্রলি দিয়ে বালু ফেলে নদীটিকে দখল করছে সৌদি বাংলা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ইকো ফ্রেন্ড লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি কোম্পানি। এর আগে নদী দখল করে গড়ে উঠেছে হিমালয় বিনোদন পার্ক নামের একটি বিনোদন কেন্দ্র। ফলে নদীটি এখন প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায়। নদীটি অচিরেই বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নদীটি বিলীন হলে পরিবেশ এবং কৃষি অর্থনীতির ওপর বিরাট প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা। ’
‘পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বাংলাদেশ নদী রক্ষা কমিশনের পঞ্চগড় জেলার নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাশয় জলাধারভিত্তিক অবৈধ দখলদারদের তালিকা অনুসারে সৌদি বাংলা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ইকো ফ্রেন্ড লিমিটেড প্রায় সাড়ে ৭ একর নদীর জমি দখল করেছে। বর্তমানে তারা নদীর প্রবহমান ধারায় বালু ফেলছে। অন্যদিকে হিমালয় বিনোদন পার্ক প্রায় সাড়ে ৮ একর জমি দখল করেছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২০
ইএস/ওএইচ/