ঢাকা: সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিম শিপন হত্যা মামলায় গ্রেফতার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এদিন তাকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ফারুক মোল্লা। আসামিপক্ষে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম সোহেল রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
শুনানিতে তিনি বলেন, এ আসামি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তিনি নিজে একজন চিকিৎসক। এখানে উদ্ধারের কোনো বিষয় নেই। প্রয়োজন হলে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হোক। শুনানি শেষে বিচারক দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগর এলাকায় নিজ বাসা থেকে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেফতার করে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সিসিটিভি ফুটেজে উপস্থিত ১০ জনের সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, পারিবারিক ঝামেলার কারণে আনিসুল মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। ৯ নভেম্বর দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আনিসুলকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই কর্মচারীদের ধাস্তাধস্তি ও মারধরে তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন পরিবার।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় কর্মচারীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। ঘটনার পর হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে তাকে মারধরের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, হাসপাতালে ঢোকার পরই আনিসুল করিমকে ৬ থেকে ৭ জন টেনে-হেঁচড়ে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে নিচে ফেলে চেপে ধরেন। হাসাপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মাথার দিকে থাকা দুইজন হাতের কনুই দিয়ে আনিসুল করিমকে আঘাত করছিলেন। এ সময় একটি কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুল করিমের হাত পেছনে বাঁধা হয়। চার মিনিট পর তাকে যখন উপুড় করা হয় তখনই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যান তিনি। এ ঘটনায় সোমবার রাতে প্রথমে ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র আনিসুল করিম ৩১ বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এক সন্তানের জনক আনিসুলের বাড়ি গাজীপুরে। সর্বশেষ আনিসুল করিম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনারে দায়িত্বে ছিলেন।
** এএসপি আনিসুলকে মাইন্ড এইডে পাঠান মানসিক স্বাস্থ্যের রেজিস্ট্রার
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২০
কেআই/ওএইচ/