ঢাকা: চট্টগ্রামের অবৈধ ইটভাটা বন্ধের আদেশ বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার অভিযোগ এনে ইটভাটা মালিক সমিতির ছয় জনকে আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠিয়েছেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, পরিবেশ রক্ষায় চট্টগ্রামের সকল অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করার নির্দেশনা চেয়ে করা জনস্বার্থে রিট মামলার শুনানি নিয়ে গত ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করে সকল অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। এ নির্দেশের পরে কার্যক্রম শুরু হলে উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে প্রায় ১০১ জন ইটভাটার মালিক ৬টি আপিল দায়ের করে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত বা স্থিতিবস্থা বজায় রাখার আদেশ প্রার্থনা করেন। কিন্তু আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত বা স্থিতিবস্থা বজায় রাখার কোনো আদেশ দেননি।
পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আদালতের আদেশ অনুসারে লাইসেন্স ব্যতীত পরিচালিত ইটভাটা বন্ধের কাজ অব্যাহত রাখা হয়। এ অবস্থায় গত ৩১ জানুয়ারি এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি আবারও আদেশ দিয়ে নির্দেশ পালনের রিপোর্ট দাখিল করতে নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।
মনজিল মোরসেদ আরও বলেন, তা সত্ত্বেও আদেশ অনুসারে প্রশাসন যাতে পদক্ষেপ নিতে না পারে সে ব্যাপারে ইটভাটা মলিক সমিতি বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে কার্যক্রম ও আদেশ বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে। এ কারণে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠানো হয়।
আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি, আদেশ অকার্যকর করার জন্য ইটভাটা মালিক সমিতির নামে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা, সাংবাদিক সম্মেলন করে আদেশ প্রত্যাহার না করা হলে ইট বিক্রি বন্ধ সহ বিভিন্ন কর্মসূচি দেওয়ার মাধ্যমে আদেশ বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার প্রেক্ষিতে আদালত অবমাননার এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
যাদের নোটিশ পাঠান হয়েছে তারা হলেন—ইসমাইল হোসেন, সেকান্দর মিয়া, আবিদ হাসান মানু, ছরওয়ার কোম্পানি, শাহ আলম (লেদু চেয়ারম্যান) এবং মো. হাসান লিটন (কমিশনার)।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, সংবিধানের ১১১ ও ১১২ অনুচ্ছেদ অনুসারে রায় মানার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সংবিধানের ১০৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে আদালতের রায় অমান্য বা প্রতিবন্ধকতা করা আদালত অবমাননার শামিল এবং শাস্তিযোগ্য আপরাধ। যেহেতু হাইকোর্টের আদেশে চট্রগ্রামের সকল অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সুতরাং ওই নির্দেশনা বাস্তবায়নে যে কোনো প্রতিবন্ধকতা ও কর্মকাণ্ড আদালত অবমাননার শামিল।
নোটিশ প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও আদেশ পালনে প্রতিবন্ধকতা বন্ধ করে তা অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে আনা হবে বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
বাংলাদেশ সময়: ২২২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১
ইএস/এমজেএফ