ঢাকা: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আব্দুল্লাহ ভূঞা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
পরে আবু আব্দুল্লাহ ভূঞা জানান, এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ৪৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৬ জনের সাক্ষ্য বিশ্লেষণ, ডিভিডিসহ আলামত উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হবে।
এ মামলায় দ্বিতীয় দফা চার্জ গঠনের পর গত ১৪ সেপ্টেম্বর কারাগারে থাকা ২২ আসামি আত্মপক্ষ শুনানিতে পুনরায় নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চেয়েছে। বাকি ৩ আসামি পলাতক থাকায় তারা আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দিতে পারেননি।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে আসামিরা। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ। ওই বছরের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ওয়াহেদুজ্জামান।
গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। মামলাটিতে ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। গত ১৪ মার্চ এ মামলায় কারাগারে থাকা ২২ আসামি আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। অপর তিন আসামি পলাতক থাকায় আত্মপক্ষ শুনানি করতে পারেনি। এরপর কয়েকজন আসামি নিজেদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যও দেন।
গত ৭ সেপ্টেম্বর মামলার চার্জে কিছু ত্রুটি থাকায় রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি পুনরায় চার্জ গঠনের আবেদন করেন। পরদিন আদালত ২৫ আসামির বিরুদ্ধে পুনরায় চার্জ গঠন করে ১৪ সেপ্টেম্বর আত্মপক্ষ শুনানির তারিখ ধার্য করেন।
আসামিরা হলেন- বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার ওরফে অপু, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, কর্মী মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মো. মুজাহিদুর রহমান, মো. মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, শামীম বিল্লাহ, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম, এস এম মাহমুদ সেতু, মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল ওরফে জিসান, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও মুজতবা রাফিদ।
আসামিদের মধ্যে প্রথম ২২ জন কারাগারে আছেন। শেষ তিনজন পলাতক। বাকি আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১
কেআই/আরবি