খুলনা: খুলনায় জেসমিন নাহারকে হত্যার দায়ে প্রেমিক আসাদ সরদার ওরফে আসাদউজ্জামান সরদার ওরফে আরিফকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আসামি আসাদ বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের নুরুল সরদারের ছেলে।
রোববার (২০ মার্চ) দুপুরে খুলনা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহমেদ।
একই সঙ্গে আদালত আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ মামলার অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. আব্দুল হালিম গাজী, শেখ ফরহাদ আহমেদ, অনুপম মহলদার ও সৈয়দ ইমাম মোসাদ্দেকীন ওরফে মোহর।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ বাউন্ডারি রোড এলাকার বাসিন্দা রাশেদ মল্লিকের ছোট মেয়ে জেসমিন নাহার। ২০১৩ সালের ২৯ নভেম্বর মায়ের নাক ফুল মেরামত করতে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়। পরবর্তীতে বাড়িতে ফিরে না আসায় চিন্তিত হয়ে পড়ে পরিবারের সদস্যরা। সম্ভাব্য সবস্থানে খবর নিয়েও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। এর দু’দিন পর সকাল সোয়া ১০টার দিকে বড় বয়রার দাসপাড়া এলাকার একটি পারিবারিক কবরস্থান থেকে পলিথিনে মোড়ানো বস্তার মধ্যে থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওইদিন নিহতের বাবা অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালের ১০ জুন উল্লেখিত আসামিদের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির এসআই পলাশ গোলদার।
হত্যাকাণ্ডের ছয় মাস আগে আসাদ নামে এক যুবকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। ২০১৩ সালের ২৯ নভেম্বর বিকেলে আসাদের সঙ্গে দেখা করতে বয়রা বন বিভাগ অফিসের সামনে আসে সেখান থেকে তকে নেওয়া হয় সৈয়দ ইমাম মোসাদ্দেকীন ওরফে মোহরের বাড়িতে। ওইখানে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় আসাদ। রাজি হয় জেসমিন। সুযোগ বুঝে আসাদ তাকে কু-প্রস্তাব দেয়। তাতে সাড়া না দেওয়ার তার জীবনের কাল হয়। প্রথমে তাকে গ্রিলের সঙ্গে ধাক্কা দেওয়া হয়। আঘাতে জেসমিনের মাথা ও নাক ফেটে যায়। সেসময় চিৎকার করলে আসাদ জেসমিনের মুখ হাত দিয়ে চেপে রাখে। সঙ্গে তার তিন বন্ধু জেসমিনের হাত ও পা চেপে রাখে। পরবর্তীতে তার মৃত্যু হলে পাটের তৈরি বস্তা ও নীল রঙের পলিথিন দিয়ে তার মরদেহ পেঁচিয়ে বড় বয়রা হাজী ফয়েজ উদ্দিন সড়কের কবরস্থানে ফেলে আসে তারা। কবরস্থান সংলগ্ন আকবর আলীর ঘরের চালে উঠলে মরদেহ দেখে পুলিশে খরব দিলে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২২
এমআরএম/কেএআর